প্রায় দুই বছর লিবিয়ার বন্দিশিবিরে আটক থাকার পর মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছেন কিশোরগঞ্জের ভৈরব পৌর শহরের জগন্নাথপুর এলাকার আরিফ আহমেদ। তিনি ওই এলাকার রেলওয়ের অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী বাবুল মিয়ার ছেলে।
জানা যায়, দুই বছর আগে অবৈধ পথে ইতালি যাওয়ার জন্য স্থানীয় দালাল ফারুক মিয়ার সঙ্গে ১২ লাখ টাকায় চুক্তি করেন আরিফ আহমেদ। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, প্রথমে ৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করে ইতালির পথে যাত্রা করেন। সেখানে পৌঁছানোর পর বাকি টাকা পরিশোধ করা হয়। লিবিয়া পৌঁছানোর পর দালাল ফারুকের সহযোগী সজীব মিয়া জানান, সাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে প্রবেশ করতে আরও তিন লাখ টাকা দিতে হবে। কথা অনুযায়ী টাকা পাঠানো হলেও আরিফকে তার গন্তব্যে পৌঁছানো হয়নি। এ সময় অন্য একটি দালাল চক্রের হাতে আটক হন আরিফ। সেখান থেকেও টাকার বিনিময়ে ছাড়া পান।
সর্বশেষ একটি চক্র আরিফকে বন্দিশিবিরে আটকে রাখে। আটকের পর ১৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। টাকা আদায়ের জন্য তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। নির্যাতনের ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগী আরিফের পরিবারের কাছে পাঠানো হয়, যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে আরিফের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে আঘাতের চিহ্ন দেখা যায়।
আরিফের পরিবার সূত্রে জানা যায়, আরিফকে মুক্ত করতে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দালাল চক্রের কাছে ১২ লাখ টাকা দিলে তাকে বন্দিশিবির থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। গত রোববার বন্দিশিবির থেকে মুক্তি পেয়ে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন আরিফ। বর্তমানে নিরাপদ জায়গায় আছেন বলে জানান তিনি।
ভৈরব পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য ফজলু মিয়া কালবেলাকে বলেন, ভিডিও ফুটেজে আরিফ আহমেদের ওপর নির্যাতনের চিত্র দেখেছি। অনেক নির্যাতন করা হয়েছে। মুক্তিপণ দিয়ে পরিবারের সদস্যরা তাকে মুক্ত করেছে। এখন বাড়িতে নিয়ে আসার চেষ্টা চলছে।