মো. কামরুজ্জামান মৃধা, ডিমলা (নীলফামারী)
প্রকাশ : ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ০২:৪৬ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ

বালু চিরে স্বপ্ন বুনছেন তিস্তা চরের কৃষকরা

বালু চিরে স্বপ্ন বুনছেন তিস্তা চরের কৃষকরা

শীত শেষে এখন প্রকৃতিতে চলে এসেছে বসন্ত। বৃষ্টির অভাবে বছরের এ সময়টায় চারদিকে কিছুটা শুষ্কতা দেখা দেয়। শুকিয়ে যায় পুকুর, খাল-বিল ও নদী। প্রকৃতির নিয়ম মেনেই তাই চর জেগেছে নীলফামারীর ডিমলা উপজেলার ওপর দিয়ে বয়ে চলা খরস্রোতা তিস্তা নদীর বুকে। মাস তিনেক আগেও যেখানে নদীর বুকে চিরে নৌকা চলত, সেখানে এখন স্বপ্ন বুনছেন চরাঞ্চলের কৃষক। চরের বালুতে সোনার ফসলের স্বপ্ন তাদের চোখে।

দেশের উত্তরের জেলা নীলফামারীর ভারতীয় সীমান্তবর্তী উপজেলা ডিমলা। এ উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের ৬টির ওপর দিয়েই বয়ে গেছে তিস্তা নদী। প্রকৃতির খেয়ালিপনায় তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের কাছে তিস্তা কখনো আশীর্বাদ, আবার কখনো অভিশাপ। একদিকে বন্যা, অন্যদিকে নদীভাঙন, এর মধ্য দিয়েই সব হারিয়েও বেঁচে থাকতে হয় তীরবর্তী এলাকার মানুষকে। নদীর তীব্র ভাঙনে তাদের একসময়কার ফসলি জমি এখন ধু-ধু বালুচর। জীবিকার তাগিদে সেখানেই চাষাবাদ করে ফসল ফলানোর সংগ্রাম করেন চরাঞ্চলের কৃষক। ধু-ধু বালুচরেই তারা ভুট্টা, সরিষা, গম, পেঁয়াজ, রসুন, শীতকালীন শাকসবজি, আলু, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসল ফলান।

উপজেলার ছাতনাই ইউনিয়নের ঝাড়সিংহেশ্বর অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা ও টেপাখরিবাড়ি ইউনিয়নের চর খড়িবাড়ি মৌজার বিস্তীর্ণ এলাকার তিস্তার চরাঞ্চলে গিয়ে দেখা গেছে, নদীর বুকে ধু-ধু বালুচরে ভুট্টা, সরিষা ও গম চাষাবাদ করছেন কৃষকরা।

চরখরিবাড়ির এলাকার কৃষক মোজাম্মেল হক বলেন, আমার সব ধানিজমি নদীতে চলে গেছে। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় এখন নদীতে চর জেগেছে। আমার আর কোনো জমি না থাকায় সেখানে ভুট্টার আবাদ করেছি। একই এলাকার হজরত আলী বলেন, আমার ১৫ বিঘা জমির মধ্যে ১৩ বিঘাই জমি নদীর বুকে বিলীন হয়ে গেছে। এখন মাত্র ২ বিঘা জমি রয়েছে। তাও বালুচর। তাতেই ভুট্টার চাষ করছি।

খলিলুর রহমান নামে আরেক কৃষক বলেন, দুই বিঘা জমিতে পাট চাষ করে বন্যায় সব হারিয়েছি। আমার হাতে কোনো টাকা নেই। কৃষি অফিস থেকে সরকারি ভুট্টার বীজ, সার পেয়েছি। তা দিয়েই এবার চরের দুই বিঘা জমিতে ভুট্টার চাষ করেছি।

উপজেলার তিস্তা নদীর বিস্তীর্ণ চরাঞ্চলের অধিকাংশ কৃষক জানান, প্রতিবছর বন্যা ও তিস্তা নদীর তীব্র ভাঙনের ফলে জীবন-জীবিকায় টিকে থাকতে কঠিন সংগ্রাম করতে হচ্ছে তাদের। এর থেকে বাঁচতে তিস্তা নদীর মহাপরিকল্পনার বাস্তবায়ন চান নদীপাড়ের হাজারও পরিবার।

উপজেলা কৃষি অফিসার (কৃষিবিদ) মো. সেকেন্দার আলী জানান, গত বছর ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় এবারও ভুট্টা চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে। এবার উপজেলায় ১৩ হাজার ৪৫৮ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। কৃষি প্রণোদনার আওতায় ১২০ হেক্টর জমিতে ৯০০ কৃষকের মাঝে ভুট্টার বীজ ও সার বিতরণ করা হয়েছে। রবি মৌসুমে চাষাবাদের বিষয়ে আমরা কৃষকদের দোরগোড়ায় গিয়ে পরামর্শ দিচ্ছি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন
  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কালবেলায় সংবাদ প্রকাশ / স্বাধীনতা দিবসের নামে চাঁদা দাবি করায় ইউএনওর ২ স্টাফ বদলি

স্কুটারে বসেই অফিস করছেন তিনি, ভিডিও ভাইরাল

মোস্তাফিজদের ম্যাচ দেখায় নতুন রেকর্ড

এখনো যুদ্ধ করার ক্ষমতা রাখে ফিলিস্তিনিরা

‘বিএনপি নেতাদের কথা শুনলে জিয়াউর রহমানও লজ্জা পেয়ে যেতেন’

কুমিল্লায় গত ১১ মাসে শতাধিক মামলায় গ্রেপ্তার ৪৬৭

বৃষ্টি হলেই সড়ক হয়ে যায় পুকুর, জনদুর্ভোগ চরমে

ব্রিটিশ গণমাধ্যমের তালিকা / পেলে-ম্যারাডোনা নয় সর্বকালের সেরা মেসি

আইপিইউ সম্মেলন শেষে দেশে ফিরলেন স্পিকার

৫ হাজার মূল্যের বাতি ২৭০০০ টাকায় কিনেছে রেল!

১০

মেট্রোরেলের ওপর দিয়ে যাওয়া ইন্টারনেট-ডিসের তার অপসারণের নির্দেশ

১১

২০০ বছরের পুরোনো ‘গায়েবি’ মসজিদের গুপ্ত তথ্য

১২

বিএনপির নেগেটিভ রাজনীতি মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছে : ওবায়দুল কাদের

১৩

জজশিপের কর্মচারীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে দুদিনের কর্মশালা অনুষ্ঠিত

১৪

সিরিয়ায় ইসরায়েলি বিমান হামলা, নিহত ৩৬ সেনা

১৫

জাভির পর কে হবেন বার্সা কোচ!

১৬

১ ঘণ্টায় শেষ রেলের ১৪ হাজার টিকিট

১৭

বিজিএপিএমইএর নির্বাচনের প্যানেল ঘোষণা

১৮

গুগলে ৪ বিষয়ে এড়িয়ে না গেলে বিপদ

১৯

নাটোরে স্কুলছাত্রের রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার, ৪ বন্ধু আটক

২০
*/ ?>
X