দেড় বছর আগে ফেসবুক লাইভে এসে ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। এ ঘটনায় ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেওয়ার অভিযোগে কণ্ঠশিল্পী ইলিয়াস হোসেন রাজধানীর পল্টন থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন। তদন্ত শেষে নুরকে পলাতক দেখিয়ে গত ৩১ জানুয়ারি আদালতে চার্জশিট দেয় ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগ। যা ভিপি নুরের বিরুদ্ধে এ পর্যন্ত হওয়া ২০টি মামলার মধ্যে প্রথম কোনো চার্জশিট।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি সাইবার অ্যান্ড স্পেশাল ক্রাইম বিভাগের পরিদর্শক মুহাম্মদ সাইফুল ইসলাম কালবেলাকে বলেন, ‘নুরুল হক নুরের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। তার বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন-২০১৮-এর ২৫/২৮/২৯/৩১ ধারায় চার্জশিট দাখিল করা হয়েছে। সাক্ষীরা আদালতে ঘটনার সত্যতা প্রমাণ করবে।’
মামলার চার্জশিটে বলা হয়েছে, ‘আসামি নুরুল হক নুর ২০২১ সালের ১৪ এপ্রিল সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক লাইভে আসেন। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশ করে আক্রমণাত্মক, মিথ্যা, মানহানিকর, উসকানিমূলক বক্তব্য প্রদান করেন। যার মাধ্যমে ধর্মীয় মূল্যবোধ ও অনুভূতিতে আঘাত করে। তিনি দেশের সামগ্রিক আইনশৃঙ্খলা অবনতি, বিভিন্ন সম্প্রদায় ও শ্রেণির মধ্যে শত্রুতা বিদ্বেষ, ঘৃণা সৃষ্টি করা, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করাসহ অস্থিরতা এবং বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করেন। তবে ৩৫ ধারায় অপরাধ প্রমাণিত হয়নি।’
২০২১ সালের ১৯ এপ্রিল মামলাটি হয়। মামলার বাদী কণ্ঠশিল্পী ইলিয়াস হোসেন কালবেলাকে বলেন, ভিপি নুর আওয়ামী লীগকে হেয়প্রতিপন্ন করে বক্তব্য দিয়েছে। তাই আমি আওয়ামী লীগের একজন সমর্থক হিসেবে মামলা করছিলাম। তদন্তে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ। এ মামলার বিচার দ্রুত শেষ করে নুরের শাস্তি হোক সেই প্রত্যাশা করছি।’
সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর কালবেলাকে বলেন, ‘এসব মামলা একদমই ভিত্তিহীন। বিরোধী দলকে দমনের অস্ত্র হিসেবে মামলা দিয়েছে সরকার। হয়রানিমূলক মামলা আইনগতভাবে মোকাবিলা করে নিজে হয়রানির শিকার হব না। প্রকৃত অপরাধী হলে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করলে তখন দেখা যাবে।’
পলাতক দেখানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেশেই আছি, নিয়মিত মিছিল-মিটিং করছি। আমাকে পলাতক দেখিয়ে মিথ্যাচার করা হয়েছে। আমরা মোটেও ভীতসন্ত্রস্ত নই। এ মামলার অভিযোগ গঠনের আগেই সরকারকে বিদায় নিতে হবে।’