‘ভাত খাইতে পাস না’ বলে ভাইরাল আইভী

‘ভাত খাইতে পাস না’ বলে ভাইরাল আইভী

সম্প্রতি বেতন বৃদ্ধিসহ ছয় দফা দাবিতে নারায়ণগঞ্জের নগর ভবন ঘেরাও করেন পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা। এ সময় তারা নগর ভবনের সামনের রাস্তায় ময়লা-আবর্জনা ফেলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী নগর ভবন থেকে বেরিয়ে এসে বলেন, ‘তোরা ভাত খাইতে পাস না, আবার দামি মোবাইল পাইলি কেমনে? তোমরা অস্থায়ী, বাংলাদেশ সরকার তোমাদের চাকরি স্থায়ী করে নাই। আমার মন চাইলে তোমাদের রাখতে পারি, মন না চাইলে রাখমু না। তোমাদের এখানে ময়লা ফেলার দুঃসাহস কে দিল?’

গত মঙ্গলবার মেয়রের এই হুমকি ঘটনায় ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয় বিভিন্ন মহলে। সেই জেরে গতকাল বুধবার বিকেলে ফতুল্লায় এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সবার কাছে করজোড়ে ক্ষমা চেয়েছেন সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। তিনি বলেন, সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মীরাও মানুষ। তারা তাদের দাবি নিয়ে নগর ভবনে গেলে সেখানে পুলিশ দিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হলো। যার জন্য আমরা নৌকা মার্কায় ভোট চেয়েছিলাম, আপনারা সবাই ভোট দিয়ে পাস করালেন, তিনি এখন আপনাদের চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন। আমি এজন্য সাংবাদিকদের মাধ্যমে সবার কাছে ক্ষমা চাই। হাতজোড় করে ক্ষমা চাই।

শামীম ওসমান বলেন, অনেকেই বলেন আমরা নাকি নারায়ণগঞ্জে ওসমানীয় সাম্রাজ্য কায়েম করেছি। আল্লাহর হুকুমে দাদা, বাবা ও ভাই ছিলেন এমপি। আমরা মানুষের মনের ভেতরে জায়গা করে নিতে পেরেছি। আমার বাবা ছিলেন একজন সাধারণ মানুষ। খান সাহেব ওসমান আলীর ছেলে ছিলেন আমার বাবা। কিন্তু আমাদের পরিবারের জন্য এক টাকাও রেখে যাননি। ৭৫ থেকে ৭৯ সাল পর্যন্ত এক বেলা ভাত খেয়েছি, আরেকবার খেতে পারি নাই। টাকার জন্য ফরম ফিলআপ করতে পারি নাই। আমার বাবা কারও জমি বা দেবোত্তর সম্পত্তি দখল করে নাই।

এর আগে গত মঙ্গলবার পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের এই আন্দোলনের সময় পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সংগঠন ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সভাপতি শিমুল দাস, সাধারণ সম্পাদক কিশোর লাল ও মামুন চন্দ্র দাসকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের হুমকি দেন আইভী। পরে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। একপর্যায়ে সেখান থেকে দৌড়ে কার্যালয়ে চলে যান কনজারভেন্সি সুপারভাইজার শ্যামল চন্দ্র পাল ও মেয়রের ব্যক্তিগত সহকারী আবুল হোসেন।

বক্তাবলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শওকত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান চন্দন শীল, কাশীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এম সাইফুল্লাহ বাদল, আলীরটেকের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন, গোগনগরের চেয়ারম্যান ফজর আলী, এনায়েত নগরের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান ও স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এমএ মান্নান।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com