
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট বাঁচাতে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) চেয়ারম্যান ইমরান খান। গত সোমবার টুইটারে শান্তিপূর্ণ এ বিক্ষোভের ডাক দেন তিনি। এদিকে পাকিস্তানে চলমান অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ও রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে প্রথমবারের মতো মুখ খুলেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটি বলেছে, পাকিস্তানি নাগরিকদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভসহ মত প্রকাশের অধিকার আছে। তবে সহিংসতায় যুক্ত হওয়া উচিত নয়। খবর দ্য ডনের।
ইমরান বলেন, সরকারকে শীর্ষ আদালত দখল করতে এবং সংবিধানকে ধ্বংস করতে নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সহায়তা করছে। তাই সবাই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের জন্য প্রস্তুত থাকুন। কারণ, একবার যদি সংবিধান এবং সুপ্রিম কোর্ট ধ্বংস হয়ে যায়, তাহলে তা পাকিস্তানের স্বপ্নের সমাপ্তি ঘটাবে।
পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্টের সামনে ক্ষমতাসীন জোটের আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, দেশ এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে এমন নির্লজ্জ আক্রমণ দেখেছে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল প্রধান বিচারপতিকে ভয় দেখানো, যাতে তিনি সংবিধান অনুযায়ী রায় না দেন। এর আগে ১৯৯৭ সালে পিএমএল-এন আদালতে হামলা চালায় এবং তৎকালীন প্রধান বিচারপতি সাজ্জাদ আলী শাহকে পদ থেকে সরিয়ে দেয়।
জনগণের উদ্দেশে তিনি আরও বলেন, সরকার আপনাদের মধ্যে ভীতি সঞ্চারের চেষ্টা করছে। আপনারা ভয়ের মূর্তি ভেঙে ফেলুন। মুষ্টিমেয় পুলিশকে ২৩ কোটি মানুষের ভয় পাওয়ার কিছু নেই। জাতি যদি চায় তারা নিপীড়ন সহ্য করবে না, সংবিধান লঙ্ঘন করতে দেবে না, তারা নির্বাচন চায়, তাহলে কেউ তাদের বাধা দিতে পারবে না। আপনারা রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ করেন। হাকিকি আজাদীর এটাই উপযুক্ত সময়। এ সময়টা বৃথা যেতে দেবেন না।
পাকিস্তানের বর্তমান পরিস্থিতিকে চেঙ্গিস খানের শাসনামলের নৃশংসতার সঙ্গে তুলনা করে বলেন, জনগণের ওপর নিপীড়ন চালিয়ে সরকার তাদের মধ্যে ভীতি ছড়িয়ে দিচ্ছে। তার সমর্থকদের ওপর এমন নির্মম-নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, যা আগে কখনো দেখা যায়নি। তারা মহিলাদের ওপরও নির্যাতন চালাতে পিছপা হচ্ছে না। এসব করে তারা জনগণের মনে ভয় ধরাচ্ছে, যাতে তারা পিছিয়ে যায়। এসবের মধ্যদিয়ে তারা জনগণকে দাস বানাতে চায়।
এদিকে গত ৯ মে ইমরান খানের গ্রেপ্তারের জেরে দেশটিতে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ে প্রথমবারের মতো কথা বলেছে যুক্তরাষ্ট্র। স্থানীয় সময় গত সোমবার যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল বলেন, পাকিস্তানের জনগণের নিজেদের মত প্রকাশের অধিকার আছে। তবে সহিংসতার মাধ্যমে তা করা উচিত না। কারণ, সহিংসতা সরকারি কর্মচারী এবং সরকারি অবকাঠামোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। ইমরান খানের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্র অন্য রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীকে সমর্থন করে না বা প্রার্থী এবং অন্য দলের বিরুদ্ধে আমাদের কোনো অবস্থানও নেই। ওয়াশিংটন-ইসলামাবাদ সম্পর্কের জন্য একটি শক্তিশালী, স্থিতিশীল এবং সমৃদ্ধ পাকিস্তান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যে কোনো গ্রেপ্তারের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রার্থীকে তাদের আইন অনুসারে মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা উচিত।