
অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকিতে থাকা রাজধানীর গাউছিয়া সুপার মার্কেটের নিরাপত্তা নিশ্চিতে ২০ দফা সুপারিশ করেছে সরকারি চার সংস্থা। গতকাল রোববার জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই), ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স, তিতাস ও ঢাকা ওয়াসার সমন্বিত পরিদর্শন শেষে এসব সুপারিশ করে। পাশাপাশি জরুরি ভিত্তিতে তা বাস্তবায়নের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মালিক সমিতিকে জানায়। পরে মার্কেটের দোকান মালিক সমিতির অফিসে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এ সময় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ওয়্যারহাউস ইন্সপেক্টর মো. গোলাম মোস্তফা বলেন, আগে পরিদর্শন করে যেসব সুপারিশ দিয়েছিলাম, তার অনেক বাস্তবায়ন করা হয়েছে। তবে এখনো কিছু ঘাটতি রয়েছে। এবার অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জামাদির ঘাটতি পূরণসহ ২০টি সুপারিশ করেছি।
সুপারিশগুলো হলো, এক্সিট সাইন/ইমারজেন্সি লাইট জরুরিভাবে সিঁড়ির পার্শ্বে স্থাপন করতে হবে। জরুরি নম্বরসমূহ দৃশ্যমান স্থানে স্থাপন করতে হবে। কলপয়েন্ট সুইচ স্থাপন করতে হবে। ফায়ার অ্যালার্ম বেল স্থাপন করতে হবে। ফায়ার পাম্প স্থাপন করতে হবে এবং সেটি আন্ডারগ্রাউন্ড পানির ট্যাঙ্কের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। প্রতি ফ্লোরের জন্য ফায়ার হাইড্রেন্ট ব্যবস্থা (রাইজারসহ) স্থাপন করতে হবে। ফ্লোরভিত্তিক ডেলিভারি হোজপাইপ স্থাপন করতে হবে (২.৫ ইঞ্চি ডায়া বিশিষ্ট)। প্রয়োজন অনুযায়ী পানির রিজার্ভার (আন্ডারগ্রাউন্ড) ট্যাঙ্ক বাড়াতে হবে। প্রতিটি ফ্লোরের জন্য পি এ সিস্টেম স্থাপন করতে হবে। সাবস্টেশন ও জেনারেটর রুমের জন্য ফায়ার ডোর স্থাপন করতে হবে। প্রয়োজনীয় ফায়ার এক্সটিংগুইসার (প্রতি ৫৫০ বর্গফুটের জন্য ০১টি করে) স্থাপন করতে হবে। ছাদের দরজা সর্বদা খোলা রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। ফায়ার রেটেড ওয়াল (সাবস্টেশন রুমে এবং জেনারেটর রুমে) স্থাপন করতে হবে এবং ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। ফ্লোরভিত্তিক প্রয়োজনীয় ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা স্থাপন করতে হবে। জেনারেটর এবং সাবস্টেশন রুমের ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা (ফায়ার সাফ্রেশন সিস্টেম) স্থাপন করতে হবে, রাবার মেট স্থাপন করতে হবে ও কেবলগুলোর আর্থিং নিশ্চিত করতে হবে। করিডোর, চলাচলের পথ পরিষ্কার/বাধামুক্ত রাখতে হবে ও সিঁড়ি পথের দোকানগুলো অপসারণ করতে হবে। বৈদ্যুতিক লাইনগুলো অনুমোদিত ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ার দ্বারা মাঝে মাঝে চেক (পরীক্ষা) করতে হবে ও বৈদ্যুতিক তারগুলো নির্দিষ্ট চ্যানেল বোর্ডের ভেতর দিয়ে নিতে হবে। ইলেকট্রিক হিটার, ইলেকট্রিক ওভেন ও কফিশপের দোকানগুলোর ফায়ার সেফটি ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে প্রশিক্ষিত ফায়ার ফাইটারের ব্যবস্থা করতে হবে ও মহড়ার ব্যবস্থা করতে হবে। ভবনের প্রতিষ্ঠানগুলোকে জরুরিভিত্তিতে ফায়ার লাইসেন্স করতে হবে।
এসব বিষয়গুলো জরুরিভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর থেকে ফায়ার সেফটি প্ল্যান অনুমোদন করে বাস্তবায়ন করতে হবে।
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ওয়াসার সহকারী প্রকৌশলী মিলন মজুমদার, উপসহকারী প্রকৌশলী অশোক কুমার হালদার, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. কামরুল হাসান বাবু, সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিশ্বাসসহ আরও অনেকে।