
এবার হজ প্যাকেজ কীভাবে ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করা হলো এবং হজ প্যাকেজের বিষয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ অবস্থান কী, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। রাষ্ট্রপক্ষের আইন কর্মকর্তাকে এ বিষয়ে কথা বলে আজ বুধবার তা আদালতকে জানাতে বলা হয়েছে। হজের খরচ কমিয়ে প্যাকেজের মূল্য ফের নির্ধারণের দাবিতে করা রিটের শুনানিতে গতকাল মঙ্গলবার বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। একই সঙ্গে এত টাকা প্যাকেজ নির্ধারণ অমানবিক হয়েছে বলেও আদালত এ সময় মন্তব্য করেন।
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন অ্যাডভোকেট গাজী মো. মহসীন, অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান খান, অ্যাডভোকেট আহসান উল্লাহ প্রমুখ। এ ছাড়া রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার। পরে ডিএজি বাশার কালবেলাকে বলেন, আদালত ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলে হজ প্যাকেজের সর্বশেষ অবস্থা আমাকে জানাতে বলেছেন। এরপর বুধবার রিটের ওপর পরবর্তী শুনানি হবে।
চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২৭ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে গত ৯ জানুয়ারি সৌদি সরকার ও বাংলাদেশ সরকারের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি অনুযায়ী এ বছর হজযাত্রীর কোটা ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন নির্ধারিত হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় ১৫ হাজার জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ১ লাখ ১২ হাজার ১৯৮ জন পবিত্র হজ পালন করতে পারবেন। এবার সরকারি ব্যবস্থাপনায় চলতি মৌসুমে হজের খরচ ৬ লাখ ৮৩ হাজার ১৮ টাকা নির্ধারণ করেছে সরকার। অন্যদিকে, কোরবানি ছাড়াই এবার বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় হজযাত্রীদের সর্বনিম্ন খরচ নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার ৬১৮ টাকা। আগের বছর এটি ছিল ৫ লাখ ২২ হাজার ৭৪৪ টাকা। অর্থাৎ আগের বছরের চেয়ে দেড় লাখ টাকা বেড়েছে।
গত ৬ মার্চ হজের প্যাকেজ মূল্য সংশোধন করে ৪ লাখ টাকা নির্ধারণ করতে সরকারকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ও আল কোরআন স্টাডি সেন্টারের প্রধান সমন্বয়ক অ্যাডভোকেট আশরাফ উজ জামান।
আইনজীবী আশরাফ উজ জামান বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ-সৌদি-বাংলাদেশ রুটে প্লেন ভাড়া ৭৬ হাজার টাকা থেকে ১ লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রতিবছর দুই দেশের সরকার হজ যাত্রীদের সৌদি ও বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনতে বাধ্য করে। এ কারণে টিকিট কিনতে হজযাত্রীদের স্বাধীনতা ধ্বংস হয়। এসব কারণসহ বিভিন্ন বিষয় উল্লেখ করে ৪ লাখ টাকার মধ্যে হজ প্যাকেজ-২০২৩ সংশোধন, পরিবর্তন এবং পুনর্নির্ধারণ করতে আইনি নোটিশে অনুরোধ করা হয়। পরে নোটিশের জবাব না পেয়ে গত ১২ মার্চ আইনজীবী আশরাফ উজ জামান জনস্বার্থে এ রিট দায়ের করেন। রিটে ধর্ম সচিব, বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের রিটে বিবাদী করা হয়।