আরাভের টাকার উৎস খুঁজছে সিআইডি

রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান।
রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খান। পুরোনো ছবি

পুলিশ হত্যাসহ অস্ত্র ও নারী নির্যাতনের ১২ মামলার দেশ পলাতক আসামি রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খানের হঠাৎ বড়লোক হয়ে ওঠার পেছনের রহস্য খুঁজতে মাঠে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তারা বলছে, দুবাইয়ে আরাভের জুলেয়ারি ব্যবসার শত শত কোটি টাকার উৎস কী, সেটা জানার চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি কোন মাধ্যমে টাকাগুলো দেশের বাইরে পাচার হয়েছে, সেটাও অনুসন্ধান চলছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট পদস্থ কর্মকর্তারা বলছেন, দুবাইয়ে তার টাকার উৎস বৈধ না অবৈধ, সেটা বের করা খুব বেশি কঠিন হবে না। কেননা এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিংয়ের (এপিজি) সহায়তায় টাকার উৎস নিশ্চিত করা যাবে। তবে কার কার মাধ্যমে টাকা পাচার হয়েছে এবং সেখানে কার টাকা রয়েছে, সেটা জানাই বড় চ্যালেঞ্জ।

জানা যায়, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় ৪১টি দেশ এবং বিশ্বের ৩০টি অবজার্ভার দেশ ও সংস্থার সংগঠন এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপ অন মানি লন্ডারিং (এপিজি)। বাংলাদেশ সংগঠনটির সদস্য। সংগঠনটির মূল কাজ হলো—এই অঞ্চলের দেশগুলোর মানি লন্ডারিং ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক মানদণ্ড বাস্তবায়নে এবং এ লক্ষ্যে দক্ষতা বাড়াতে কাজ করা। সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট সূত্র বলছে, প্রাথমিকভাবে তারা আরাভের বিষয়ে অনুসন্ধান শুরু করেছে। কিছু তথ্য-প্রমাণ মেলার পর শিগগিরই আনুষ্ঠানিকভাবে অর্থ পাচার নিয়ে কাজ করা হবে।

জানতে চাইলে সিআইডির মুখপাত্র আজাদ রহমান কালবেলাকে বলেন, অর্থ সংশ্লিষ্ট এমন যে কোনো বিষয়ে সিআইডি কাজ করে থাকে। তবে এ বিষয়টির সম্পর্কে সিআইডি প্রধানের সঙ্গে কথা বলে জানাতে হবে।

সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে গত বুধবার এক জমকালো অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আরাভ জুয়েলার্সের উদ্বোধন করা আরাভ খান এখন বাংলাদেশে তুমুল আলোচিত নাম। এ অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ক্রীড়া ও বিনোদন জগতের অনেক তারকাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে ফেসবুকে একাধিক পোস্ট দিয়েছিলেন আরাভ খান। তখনই তাকে শনাক্ত করেন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্মকর্তারা।

গোয়েন্দা পুলিশের তথ্যমতে, আরাভ জুয়েলার্স নামে ওই প্রতিষ্ঠানের মালিক আরাভ খানের আসল নাম রবিউল ইসলাম। বাংলাদেশের গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় তার বাড়ি। তিনি সোহাগ মোল্লা, হৃদয় শেখ, আপন—এ রকম কয়েকটি নামে পরিচিত। ২০১৮ সালের ৭ জুলাই ঢাকায় পুলিশের পরিদর্শক মামুন এমরান খান খুন হন। সেই খুনের আসামি হয়ে দেশ ছেড়েছিলেন রবিউল।

ডিবি বলছে, দেশ থেকে পালিয়ে রবিউল ইসলাম প্রথমে ভারতে যান। সেখানে আরাভ খান নামে পাসপোর্ট সংগ্রহ করে দুবাই চলে যান। এখন তিনি দুবাইয়ের বড় স্বর্ণ ব্যবসায়ী।

এদিকে দুবাইয়ের স্বর্ণ ব্যবসায়ী আরাভ খান ওরফে রবিউল ইসলামকে দেশে ফিরিয়ে আনার সব চেষ্টা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। গতকাল শনিবার তেজগাঁওয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মদিন উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে যোগদান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এরই মধ্যে তাকে (আরাভ খান) ধরতে ইন্টারপোলের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। তাকে দেশে ফেরাতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে। তবে আরাভ যেহেতু ভারতীয় পাসপোর্টধারী, সেক্ষেত্রে কোন আইনে ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে বাংলাদেশে ফেরত আনা হবে, সে প্রশ্নের স্পষ্ট জবাব দেননি মন্ত্রী।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com