জামায়াতের বৈঠক : এটুআই থেকে ফাহিম বাদ, মাসুমের বিষয়ে খোঁজ চলছে

জামায়াতের বৈঠক : এটুআই থেকে ফাহিম বাদ, মাসুমের বিষয়ে খোঁজ চলছে

রাজধানীর মিরপুরে জামায়াতের ‘গোপন বৈঠকে’ যোগ দিয়ে গ্রেপ্তার হওয়ার পর অ্যাস্পায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) প্রকল্প থেকে আব্দুল্লাহ আল ফাহিমকে সাময়িক অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। ঘটনা তদন্তে প্রকল্পের পক্ষ থেকে ৫ সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকের উপব্যবস্থাপক আবু মাসুম সিদ্দিকীর বিষয়ে খোঁজ নেওয়া শুরু করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

গত শনিবার রাতে ‘গোপন বৈঠক’ চলাকালে জামায়াত-শিবিরের ৫৮ নেতাকর্মীর সঙ্গে ওই দুজনকেও গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মামলার এজাহারে তাদের পেশা উল্লেখ করা না হলেও জামায়াতের সক্রিয় সদস্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়। গতকাল সোমবার দৈনিক কালবেলায় ‘জামায়াতের গোপন বৈঠকে সরকারি দুই কর্মকর্তা’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদন চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে।

এদিকে গতকাল এটুআইর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আব্দুল্লাহ আল ফাহিম এটুআইর কর্মকর্তা নন। তিনি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের আওতাধীন ওই প্রকল্পের ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ফাহিম আউটসোর্স কর্মী হিসেবে কাজ করতেন।

ওই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ফাহিম মূলত বিভিন্ন প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সমন্বয় ও সম্পাদন করে থাকেন। এটুআই-কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সকল সফটওয়্যার, ডাটাবেজ, কনটেন্ট এবং ডিজিটাল সেবার ব্যবস্থাপনায় তার কোনো সংশ্লিষ্টতা ও নিয়ন্ত্রণ নেই।

এটুআই প্রকল্পের এক কর্মকর্তা কালবেলাকে জানিয়েছেন, প্রকল্পের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ‘সিকিউরিটি ক্লিয়ারেন্স’ রয়েছে। তবে সব কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট ভেন্ডর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পুনরায় ‘সিকিউরিটি ভেরিফিকেশনের’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এ বিষয়ে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রাথমিক তথ্যের ভিত্তিতে এটুআই সংশ্লিষ্ট সব ধরনের কার্যক্রম থেকে আব্দুল্লাহ আল ফাহিমকে সাময়িক অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মেজবাউল হক গতকাল কালবেলাকে বলেন, উপব্যবস্থাপক আবু মাসুম সিদ্দিকীর গ্রেপ্তারের বিষয়টি তারা গণমাধ্যমে জেনেছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষ থেকে তাদের অফিসিয়ালি জানানো হয়নি। আনুষ্ঠানিকভাবে জানার পর ওই কর্মকর্তার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে তারা খোঁজখবর নিচ্ছেন।

ওই দুই কর্মকর্তাসহ জামায়াতের ৫৮ জনকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় দায়ের মামলায় পুলিশ উল্লেখ করেছে, স্বাধীনতা দিবসের কর্মসূচিকে ঘিরে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটানোর জন্য ওই বৈঠকে মিলিত হয়েছিল জামায়াতের নেতাকর্মীরা।

মিরপুর-১-এর ক্যাপিটাল টাওয়ারের ষষ্ঠতলায় ফোর-সি ক্লাসি চায়নিজ অ্যান্ড কনভেনশন কর্নারের কনফারেন্স কক্ষে ওই বৈঠক হয়। সেখান থেকে ৮ ককটেলও উদ্ধার করা হয়েছে। ওই মামলায় জামায়াতের সক্রিয় সদস্য হিসেবে গ্রেপ্তার হওয়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তা আবু মাসুম সিদ্দিকী এজাহারে ২০ নম্বর আসামি এবং এটুআই প্রকল্পের কর্মী আব্দুল্লাহ আল ফাহিম এজাহারভুক্ত ৩৬ নম্বর আসামি।

দারুস সালাম থানার ওসি শেখ আমিনুল বাসার কালবেলাকে বলেন, গ্রেপ্তার ৫৮ জনের মধ্যে ১০ জনকে তারা রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। ওই মামলায় কারাগারে থাকা অপর আসামিদেরও প্রয়োজনে রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।

ওসি বলেন, আসামি বেশি থাকায় তাদের পেশাগত পরিচয় জানা সম্ভব হয়নি। তবে সরকারি একটি প্রকল্পের একজন ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ওই কর্মকর্তার বিষয়ে তদন্ত করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হবে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com