সাবধান! ছাড় নয় গুজব ছড়ালে

সাবধান! ছাড় নয় গুজব ছড়ালে

আসন্ন পবিত্র রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং খাদ্যের সংকট বা অপর্যাপ্ততা রয়েছে—এমন গুজব ছড়ালে ছাড় দেওয়া হবে না। গুজব সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে নজরদারি শুরু করেছে পুলিশ। তা ছাড়া রোজা সামনে রেখে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধে পুলিশের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার মনিটরও করা হবে। এরই মধ্যে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে সারা দেশের এসপিদের এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ কর্মকর্তারা বলছেন, রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন নিশ্চিতে সব ধরনের চাঁদাবাজি প্রতিরোধেও মাঠ পর্যায়ে কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চাঁদাবাজি প্রতিরোধে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশ সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করবে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, গতকাল মঙ্গলবার এ বিষয়ে পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন। এতে সব মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি ও ৬৪ জেলার পুলিশ সুপাররা যুক্ত হন। রমজান মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখাসহ প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয় তাদের।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি (অপারেশন্স) মো. হায়দার আলী খান কালবেলাকে বলেন, অতিরিক্ত আইজিপি (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) মো. আতিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে মঙ্গলবার হেডকোয়ার্টার্সে জানুয়ারি মাসের মাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভা ছিল। এতে আসন্ন রমজানে বাজার পরিস্থিতিসহ সব ধরনের পরিস্থিতি যাতে স্বাভাবিক থাকে, সে জন্য মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, ভেজাল খাদ্য প্রতিরোধসহ এসব ক্ষেত্রে সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমিটি রয়েছে। রমজানে এসব কমিটিকে পুলিশ সর্বাত্মক সহায়তা করবে। নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্য নেওয়া বা ইচ্ছামতো পণ্যের দাম বাড়ানোর খবর পেলে পুলিশের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে ম্যাজিস্ট্রেটকে অবহিত করা হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে পুলিশের পক্ষ থেকে সহায়তা করা হবে। রমজানে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি প্রতিরোধে বাজার মনিটরের জন্য পুলিশ কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, একটি গোষ্ঠী রমজানসহ নানা ধর্মীয় ও জাতীয় উৎসব ঘিরে গুজব ছড়ায়। বাজারে পণ্যের সংকট বা দাম বেড়ে যাচ্ছে–রমজানে এমন গুজব ছড়িয়ে অপ্রীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। এদের ছাড় দেওয়া হবে না। এ বিষয়ে এখন থেকেই মনিটর শুরু হয়েছে।

সভায় যুক্ত ছিলেন এমন এক কর্মকর্তা কালবেলাকে বলেন, অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পঞ্চগড়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই আলোচনার সূত্র ধরে সাম্প্রদায়িক ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে কোনো গোষ্ঠী যাতে কোনো ধরনের ষড়যন্ত্র করতে না পারে, সেজন্য সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে এসপিদের। পাশাপাশি এক্ষেত্রে পুলিশি তৎপরতা বাড়াতেও বলা হয়েছে।

পরিবহনে চাঁদাবাজির কারণে পণ্যমূল্য বেড়ে যায়–এমন তথ্যের ভিত্তিতে রমজানের প্রয়োজনীয় পণ্য পরিবহন নিশ্চিতে সব ধরনের চাঁদাবাজি প্রতিরোধে জেলা ও হাইওয়ে পুলিশকে সম্মিলিতভাবে দায়িত্ব পালন করতে বলা হয়।

অতিরিক্ত আইজিপি মো. আতিকুল ইসলাম মাঠ পর্যায়ের পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে বলেন, আসন্ন ঈদে ঘরমুখো মানুষের যাত্রা নির্বিঘ্ন করার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে। মহাসড়কের দুপাশের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ এবং ফিটনেসবিহীন গাড়ির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশনা দেন তিনি।

একাধিক জেলার পুলিশ সুপারদের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, রমজানে অযথা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঠেকাতে থানা পুলিশের মাধ্যমে কাঁচাবাজার ও মার্কেটগুলোর কমিটি এবং ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হবে। বৈধভাবে ব্যবসা করতে ব্যবসায়ীদের যে কোনো ধরনের সহযোগিতা করা হবে। তবে কোনোভাবেই অযথা বা পণ্যের সংকট সৃষ্টি করে মূল্য বাড়াতে দেওয়া হবে না।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com