
কক্সবাজারের উখিয়ায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দুর্বৃত্তদের গুলিতে আবারও মোহাম্মদ রশিদ (৩৫) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক খুন হয়েছেন। তিনি উখিয়ার বালুখালী ৮ নম্বর রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। গতকাল বুধবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ওসি শেখ মোহাম্মদ আলী।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে ওসি জানান, এনজিও অফিসে ডিউটি শেষে রাতে শেডে ফেরার সময় মোহাম্মদ রশিদকে গুলি করে দুর্বৃত্তরা। পরে তারা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতাল মর্গে নেওয়া হয়।
প্রশাসনের কঠোর নজরদারির পরও একের পর এক খুন হচ্ছেন ক্যাম্পের মাঝি ও শরণার্থীরা। এবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন আরেক স্বেচ্ছাসেবক। পরিস্থিতির এমন অবনতিতে শরণার্থীদের পাশাপাশি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন আশ্রয়শিবিরে কর্মরত এনজিও সংস্থার কর্মীরা। সবশেষ গত ৮ মার্চ সকালে উখিয়ার কুতুপালং-২ ইস্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্পে একটি চায়ের দোকানের সামনে সৈয়দ হোসেন নামে এক রোহিঙ্গা নেতাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। গত ৬ মার্চ রাতে উখিয়ার ৯ নম্বর ক্যাম্পের সি-ব্লকে দুর্বৃত্তের গুলিতে খুন হন নুর হাবিব ওরফে ডাক্তার ওয়াক্কাস নামে এক রোহিঙ্গা নেতা। আর গত ৩ মার্চ ১৯ নম্বর ক্যাম্পের এ-ব্লকে মোহাম্মদ রফিক নামে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে রোহিঙ্গা দুর্বৃত্তরা।
এরও আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি রাতে কুতুপালং শান্তি সলিম আশ্রয় শিবিরে (ক্যাম্প-৫) আরসা ও আরএসওর মধ্যে কয়েক ঘণ্টা ধরে গোলাগুলি ও সংঘর্ষ হয়। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন রোহিঙ্গা মাঝি (নেতা) সলিম উল্লাহ। একই দিন দুপুরে উখিয়ার বালুখালী ক্যাম্প-৮-এ সন্ত্রাসীদের দুই গ্রুপের মধ্যে গোলাগুলিতে দুই রোহিঙ্গা শিশু গুলিবিদ্ধ হয়।
বিভিন্ন গণমাধ্যমের তথ্য বলছে, চলতি বছর ছয় রোহিঙ্গা নেতা ও নারীসহ খুন হয়েছেন ১২ জন। এ ছাড়া পৃথক ঘটনায় দুই শিশুসহ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সাতজন। আর গত চার মাসে ক্যাম্পে খুনের ঘটনা ঘটেছে ত্রিশটিরও বেশি। একই সময়ে সন্ত্রাসীদের হামলায় আহত হয়েছে অন্তত দুই শতাধিক রোহিঙ্গা।