
আওয়ামী লীগ দেশে সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ন্যাড়া বারবার বেলতলায় যায় না। ক্ষমতাসীনরা গোটা বাংলাদেশকে লুটে শেষ করেছে। এখন আরও ৫ বছর লুট করতে চায় এবং তারা ভোট চাইতে শুরু করেছে। আর বলছে, নির্বাচন তো হবে... নির্বাচনে আসেন। গতকাল সোমবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এ অভিযোগ করেন। অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশ-অ্যাবের উদ্যোগে রাজধানীর বনানীতে একটি হোটেলে ‘দেশের জ্বালানি খাতে অমানিশা : লুটপাট আর অরাজকতার চালচিত্র’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন সংগঠনটির মহাসচিব প্রকৌশলী হাছিন আহমেদ।
মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়ে যাচ্ছে। লুটপাটের সুবিধার্থে বিদ্যুৎ খাতকে বেছে নেওয়া হয়েছে। রেন্টাল-কুইক রেন্টাল (ভাড়াভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র) আর ক্যাপাসিটি চার্জ দিয়ে বাজে অবস্থা করেছে। কয়েকটি কোম্পানি সরাসরি আওয়ামী লীগের সঙ্গে জড়িত, সিংহভাগ তারাই নিয়ে যাচ্ছে। মানুষের পকেটের টাকা লুট করে বিদেশে বিনিয়োগ করছে তারা।
তিনি বলেন, কিছুদিন ধরে সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা বারবার একটা কথা বলছে, অগ্নিসন্ত্রাস হবে, আবার আগুন নিয়ে খেলবে বিএনপি। এটা কিন্তু অত্যন্ত পরিকল্পিত একটি বক্তব্য। তারা করবে, সেজন্যই তারা এ কথাগুলো বলতে শুরু করেছে। কিছুটা সফলও হয়ে যাচ্ছে। আমি পত্রিকায় দেখছি যে, বিভিন্ন দূতাবাস থেকে অ্যালার্ট করা হচ্ছে তাদের নাগরিকদের।
মহাসচিব বলেন, সম্প্রতি খুলনা, রাজবাড়ী ও নেত্রকোনা এবং পটুয়াখালীতে যা করেছে, এর কারণ একটাই। জনগণের চলমান এই প্রতিবাদকে বন্ধ করতে হলে সন্ত্রাসই একমাত্র পথ। এর মাধ্যমে জনদাবিকে তারা দমাতে চায়। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে হলে সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া বিকল্প নাই।
তিনি বলেন, আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি মেনে নিতে হবে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এখানে কোনো নির্বাচন হবে না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের স্বমূর্তিধারণ করেছেন উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তিনি কিছুদিন কথা বললেন একটু ভদ্রলোকের মতো। এখন আবার বলতে শুরু করেছেন, প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে, প্রতিরোধ করা হবে। আমি আমার দাবির কথা বলব, রাস্তায় বলব, মিটিং-সভা করে বলব, আমি গণতন্ত্র চাই। আমাদের প্রতিরোধ করা হবে। প্রত্যেক দিন শান্তি সমাবেশ করছিলেন তারা। এর সমালোচনা হওয়াতে এখন বলছেন প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে। গত কয়েক বছর ধরে তো এই পুলিশ দিয়ে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করেছেন।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ নব্য বর্গি, তারা সব লুটপাট করে নিচ্ছে। এদের উদ্দেশ্য ক্ষমতায় থাকা। মানুষকে বোকা বানানোর জন্য তারা ভিন্ন ভিন্ন প্রচার করে যাচ্ছে। এখনো নির্বাচন শুরুই হয়নি অথচ রোববার রাতে বিএনপি নেতা রফিকুল আলম মজনুকে তুলে নিয়ে গেছে গোয়েন্দা পুলিশ।
অ্যাবের সভাপতি প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজুর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব কে এম আসাদুজ্জামান চুন্নুর পরিচালনায় সভায় বক্তব্য দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সাবেক প্রোভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের এ জেড এম জাহিদ হোসেন, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ফরহাদ হালিম ডোনার, ইউট্যাবের এ বি এম ওবায়দুল ইসলাম, ঢাবি সাদা দলের অধ্যাপক লুতফর রহমান, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া, সাংবাদিক সৈয়দ আবদাল আহমদ, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, অ্যাবের সিনিয়র নেতা প্রকৌশলী আশরাফ উদ্দিন বকুল, প্রকৌশলী মোস্তাফা-ই জামান সেলিম, প্রকৌশলী মঞ্জুর মোর্শেদ, প্রকৌশলী মাহবুব আলম, রুয়েটের অধ্যাপক এস এম আব্দুর রাজ্জাক, মহিউদ্দিন আহমেদ সেলিম, এ কে এম জহিরুল ইসলাম ও শামীম রাব্বি সঞ্চয় প্রমুখ।