রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রচার আজ রোববার মধ্যরাতে শেষ হচ্ছে। প্রচারের শেষ মুহূর্তে বেশ ফুরফুরে মেজাজে রয়েছেন জাতীয় পার্টির প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি আশাবাদী, গত নির্বাচনের চেয়েও বড় ব্যবধানে জয়ী হবেন। তার নামে যুক্ত হবে আরও অর্ধলাখ ভোট। অন্যদিকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী অ্যাডভোকেট হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী হলেও থেকে যাচ্ছে অস্বস্তি। মেয়র পদে প্রার্থী তালিকায় রয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান। স্বতন্ত্র প্রার্থী হলেও তিনি আওয়ামী লীগের কর্মী, ভাগ্নি জামাই এই সিটির সাবেক মেয়র সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টুর। আর এতেই অস্বস্তি। দলটির কর্মী-সমর্থকরা মনে করছেন, নৌকা প্রতীকের কিছু ভোট জমা হবে লতিফুর রহমানের ভান্ডারেও।
নির্বাচন ঘিরে কঠোর অবস্থানে
নির্বাচন কমিশন। আজ রাতে মাঠে নামছে ১১ প্লাটুন বিজিবি, ১৭ প্লাটুন র্যাব, ৩৩ প্লাটুন পুলিশ এবং প্রতিটি ওয়ার্ডে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৩৩ জন ছাড়াও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন ১৬ জন।
প্রয়াত সরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু সাবেক সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌর চেয়ারম্যান ও রংপুর সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র। সবশেষ ২০১৭ সালের রংপুর সিটি নির্বাচনে তিনি নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছিলেন ৬২ হাজার ৪০০। ওই বছর নৌকার বিরুদ্ধে শক্ত প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পাটির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। তিনি ১ লাখ ৬০ হাজার ৪৮৯ ভোট পেয়ে বিজয়ী হন। এ কারণে ধারণা করা হচ্ছে, ঝন্টুর জনপ্রিয়তা কাজে লাগিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার লতিফুর রহমান নৌকার কিছু ভোটে ভাগ বসাবেন, যা অস্বস্তি তৈরি করছে ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থী ডালিয়ার শিবিরে।
গতকাল নগরীর প্রেস ক্লাব, স্টেশন রোড, জাহাজ কোম্পানি, পায়রা চত্বর এলাকায় গণসংযোগ করেন জাপা প্রার্থী মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা। এ সময় তিনি জয়ের ব্যাপারে নির্ভার হয়ে বলেন, দলমত নির্বিশেষে সবার ভোট প্রত্যাশা করছি। গত বছরে ৯৮ হাজার ভোট বেশি পেয়ে জনগণ আমাকে নির্বাচিত করেছিল। আমি এই পাঁচ বছরে জনগণকে অনেক কিছু দিয়েছি। তাদের সঙ্গে ছিলাম। আমি আশা করছি, এবারও মানুষ আমাকে নির্বাচিত করবেন। গত বছরের চেয়ে আরও অনেক ভোট বেশি পাব।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত এই নির্বাচনে অংশ নেয়নি। তারা তো আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না। আমি আশা করি তাদের ভোট আমি ব্যক্তি মোস্তফা পাব। তাদের দুই দলের ভোট রয়েছে ৫০ হাজারের বেশি।
অন্যদিকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া বলেন, আমি যেদিক দিয়ে হাঁটছি নোংরা ময়লা, ড্রেন জরাজীর্ণ। সিটি করপোরেশনের এলাকাতেই এই অবস্থা। শহরতলির অবস্থা আরও খারাপ। আমার প্রাণ কেঁদেছে মা হিসেবে বোন হিসেবে। আমি নৌকা প্রতীক নিয়ে ভোট করছি। আওয়ামী লীগের কর্মী-সমর্থক পরিবার ছাড়াও সাধারণ মানুষ নৌকায় ভোট দেবে। জয় আমাদের নিশ্চিত।
স্বতন্ত্র প্রার্থী লতিফুর রহমান মিলন বলেন, একজন প্রার্থীর জন্য ১৭ দিন খুব অল্প সময়। আমি মূলত এই নির্বাচন করছি দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে, রংপুরের মানুষকে উন্নয়নের পথে জেগে তোলার জন্য নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আমি মনে করি, রংপুরের মানুষ এই ভোটে প্রমাণ করবে, আমি জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী।
রংপুর রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল বাতেন বলেন, আজ প্রচার শেষ হচ্ছে। কেউ আচরণবিধি ভঙ্গ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর অ্যাকশন নেওয়া হবে। তিনি বলেন, নগরীতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কঠোর রয়েছে প্রশাসন। রোববার রাত থেকে পুলিশ র্যাবের পাশাপাশি বিজিবি মোতায়েন থাকবে।