ফেনীর দাগনভূঞায় একাধিক স্কুলছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে একই স্কুলের দপ্তরি কাম নৈশপ্রহরীর বিরুদ্ধে। উপজেলার চণ্ডীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরি হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
অভিযুক্ত হুমায়ুন উপজেলার পশ্চিম চণ্ডিপুর গ্রামের মৃত শরিয়ত উল্যার ছেলে। একই সঙ্গে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনের বিরুদ্ধেও নানা অভিযোগ স্থানীয়দের।
এ ঘটনায় অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এ ব্যাপারে এক ছাত্রী বাদী হয়ে গত ৭ মে ইউএনওর কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। এরপর একাধিক অভিভাবক মুখ খুলতে শুরু করেছেন।
অভিযোগে জানা গেছে, ওই ছাত্রীসহ একাধিক ছাত্রী স্কুলে এলে দপ্তরি হুমায়ুন কবীর কৌশলে তার শরীরের স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়। বিষয়টি প্রধান শিক্ষক ও স্থানীয় মেম্বারকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা নেননি।
ভুক্তভোগী একাধিক ছাত্রী জানায়, দপ্তরি কবীর শিক্ষক না হয়েও ক্লাস রুমে গিয়ে ছাত্রীদের শরীরের বিভিন্ন স্থানে হাত দেন। মারধরের ভয় দেখিয়ে শিক্ষক-অভিভাবকদের না জানাতে শাসিয়ে দেন।
উত্তম কুমার নামে এক অভিভাবক জানান, হুমায়ুনের কর্মকাণ্ডে অভিভাবকরা ক্ষুব্ধ। বিষয়টি প্রধান শিক্ষককে অবহিত করলেও কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে উল্টো বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। মেয়েদের স্কুলে পাঠিয়ে পরিবার শঙ্কার মধ্যে থাকেন। শুধু তাই নয়, স্কুল সংলগ্ন বাড়ির খামারে গরু-ছাগল ও মুরগির খামারে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যস্ত রাখেন প্রধান শিক্ষক।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া জানান, অভিযোগের তদন্ত করতে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সুজন কান্তি শর্মা জানান, ঘটনার তদন্তে সরেজমিন এলাকাবাসী, ভুক্তভোগী ছাত্রী, তাদের অভিভাবক ও অভিযুক্ত হুমায়ুন কবীরের বক্তব্য নেওয়া হয়েছে। প্রধান শিক্ষককে কর্মস্থলে না পাওয়ায় তাকে রোববার সকালের মধ্যে হাজির হতে বলা হয়েছে। দ্রুত তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, হুমায়ুন কবীরের বিরুদ্ধে আগেও যৌন নিপীড়নের অভিযোগের তদন্ত চলমান। গরু-ছাগলের খামারে ছাত্র-ছাত্রীদের ব্যবহারের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
অভিযোগ অস্বীকার করে দপ্তরি হুমায়ুন কবীর বলেন, তার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। অতীতেও নানাভাবে তাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
ফেনী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন আহমেদ জানান, বিষয়টি জানার পর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে খোঁজখবর নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।