চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অক্সিজেন কারখানা বন্ধের ঘোষণা স্থগিত করেছে বিএসবিআরএ। গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে এক জরুরি আলোচনা সভা শেষে এই সিদ্ধান্ত জানান চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান। এ ছাড়া আজকের (শনিবার) মানববন্ধনও স্থগিত করা হয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার জাহাজভাঙা শিল্প মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ শিপ ব্রেকার্স অ্যান্ড রিসাইক্লার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসবিআরএ) প্রতিবাদ সভায় সীতাকুণ্ডের সব অক্সিজেন কারখানা বন্ধের ঘোষণা দেন বিভিন্ন কারখানার মালিকরা। পরে নগরীর জামালখানে প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল বিএসবিআরএ।
সীমা অক্সিজেন প্লান্টের পরিচালক পারভজ উদ্দিনের কোমরে দড়ি বেঁধে আদালতে হাজির করার প্রতিবাদে সীতাকুণ্ডের সব অক্সিজেন কারখানা বন্ধের ডাক দিয়েছিল সংগঠনটি। এদিকে বৃহস্পতিবার এক জরুরি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুক্রবার সকাল থেকেই সীতাকুণ্ডের সব অক্সিজেন কারখানা বন্ধ ছিল।
এদিকে জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান জানান, সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় প্রশাসনের সঙ্গে মালিকদের দূরত্ব তৈরি হয়েছে। কারখানা বন্ধের ঘোষণা কিংবা মালিকপক্ষের মানববন্ধনের ঘটনা সমস্যা আরও প্রকট আকার ধারণ করত। যে কারণে মালিকপক্ষের সঙ্গে জরুরি আলোচনা শেষে আমরা সামগ্রিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই আলোচনার মাধ্যমে সীতাকুণ্ডের অক্সিজেন কারখানা বন্ধের ঘোষণা প্রত্যাহারসহ শনিবারের মানববন্ধনের কর্মসূচি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শনিবার থেকে সীতাকুণ্ডের সব কারখানা স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহরের বিষয়ে বিএসবিআরএর সিনিয়র সহসভাপতি ও পিএচপি শিপইয়ার্ডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু জানান, জেলা প্রশাসন, শিল্প পুলিশের সঙ্গে জরুরি সভায় আমাদের কারখানা বন্ধ ঘোষণা এবং শনিবার যে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে মানববন্ধনের ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল সেগুলো প্রত্যাহার করা হয়েছে।
শনিবার সকাল থেকে সীতাকুণ্ড এলাকার অক্সিজেন কারখানাসহ অনান্য সব কারখানা স্বাভাবিক নিয়মে চলবে। আমরা আমাদের কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে নিচ্ছি। তবে আমরা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছি। শিল্প পুলিশের এসপি মোহাম্মদ সেলাইমান বলেন, পারভেজ উদ্দিন সান্টুর হাতে হ্যান্ডকাফ ও কোমরে দড়ি দিয়ে বেঁধে নেওয়ার ঘটনা অমানবিক। আমরা অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যকে সাসপেন্ড করেছি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত গ্রহণ করা হবে।
উল্লেখ্য, গত ৪ মার্চ সীতাকুণ্ডের সীমা অক্সিজেন লিমিটেডের কারখানায় বিস্ফোরণের ঘটনায় ৭ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হন। এ ঘটনায় কারখানাটির মালিক তিন ভাইসহ ১৬ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়। মামলায় সান্টুকে গ্রেপ্তারের পর কোমরে দড়ি ও হাতে হ্যান্ডকাফ পরিয়ে আদালতে তোলা হয়। পরে পুলিশ ৭ দিনের রিমান্ড আবেদন চাইলে আদালত এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।