মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিটিআরআই) ভারপ্রাপ্ত পরিচালক মো. ইসমাইল হোসেনের বিরুদ্ধে বন বিভাগের অনুমতি ছাড়া অর্ধশতাধিক গাছ কাটার অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, কর্তনকৃত গাছগুলোর আনুমানিক মূল্য প্রায় ২৫-৩০ লাখ টাকা। মাত্র কয়েক দিনের ব্যবধানে গাছ কেটে ফেলা হলেও বন বিভাগ বলছে, তারা কিছুই জানে না। তবে গাছ কাটার বিষয়ে কথা বলতে একাধিকবার গিয়েও অভিযুক্ত চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক ইসমাইল হোসেনকে পাওয়া যায়নি। ফোন দিয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তথ্য অফিসের ফরম পূরণ করেন। লিখিতভাবে প্রশ্নের উত্তর দেব বলে তাৎক্ষণিক ফোন কেটে দেন।
গাছ কাটার দায়িত্বে থাকা মুজাহিদ ইসলাম জানান, বড় স্যারদের নির্দেশে আমাদের দায়িত্ব পালন করতে হয়। অন্যথায় চাকরি থাকবে না বলেও সংশয় প্রকাশ করেন মুজাহিদ।
বন বিভাগের সিলেটের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. তৌফিকুল ইসলামকে বিষয়টি অবহিত করা হলে তিনি তাৎক্ষণিক শ্রীমঙ্গল বন অফিসের রেঞ্জার দ্বীন মোহাম্মদের নেতৃত্বে একটি টিম ঘটনাস্থলে পাঠিয়ে গাছগুলো জব্দসহ মামলা করা হবে বলে জানান।
শ্রীমঙ্গল বন অফিসের রেঞ্জ কর্মকর্তা দ্বীন মোহাম্মদ জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি এবং পরিচালককে নির্দেশ দিয়ে এসেছি কর্তনকৃতগাছগুলো বন বিভাগের অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত যেখানে যে অবস্থায় আছে, সে অবস্থাতেই রেখে দেওয়া হয়। যদিও কর্তনকৃত গাছগুলো কোথায় কী অবস্থায় আছে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কিছুই বলতে পারেননি দ্বীন মোহাম্মদ।
স্থানীয়রা জানান, বেশ কিছুদিন ধরেই বিটিআরআই এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে প্রচুর গাছ কেটে চা বোর্ড অফিসের ভেতরে মিনি ফ্যাক্টরির পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছিল।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, বন বিভাগের অভিযানের খবর পেয়ে তড়িঘড়ি করে গাছগুলো ট্রাক দিয়ে স মিলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। মিনি ফ্যাক্টরির সামনে এই মুহূর্তে ৮ থেকে ১০ টুকরা গাছ পড়ে আছে দেখে ওই স্থানে কর্মরত এক নারীকে গাছগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি প্রতিবেদককে জানান, গাছ তো সব স মিলে নিয়ে গেছে। কর্তনকৃত গাছগুলোর মধ্যে মেহগনি, বেলজিয়াম, কাঁঠাল, আম, শিলকরইসহ বিভিন্ন প্রজাতি ও বয়সের গাছ রয়েছে।
শ্রীমঙ্গল বন বিভাগের সদ্য যোগদানকৃত সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মারুফ হোসেন বলেন, আমি সবেমাত্র যোগদান করেছি। গাছ কাটার বিষয়টি আমি এখনো সম্পূর্ণ জানি না। তবে গাছ কাটতে বন বিভাগ ছাড়াও চা বোর্ড, জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে লিখিত অবহিত করার নিয়ম রয়েছে। সংশ্লিষ্টদের নিয়ে গঠিত কমিটি এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে বিষয়টি তদন্ত করে দেখবে।