নীলফামারীর ডিমলা উপজেলায় অতিদরিদ্রদের মধ্যে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (এফএফপি) আওতায় নিম্নমানের ও পোকাযুক্ত চাল বিতরণের অভিযোগ তুলেছেন সুবিধাভোগীরা। উপজেলায় ৪১ ডিলারের মাধ্যমে ২০ হাজার ৫৩৯ জন সুবিধাভোগীর মধ্যে খাদ্য অধিদপ্তরের অধীনে এই কর্মসূচির আওতায় এ চাল বিক্রি করা হচ্ছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিনের পুরোনো, পচা, ইটের টুকরো মেশানো, দুর্গন্ধ ও পোকাযুক্ত নিম্নমানের চাল বিক্রি করা হচ্ছে। এসব চাল ডিমলা উপজেলা খাদ্যগুদাম সরবরাহ করেছে বলে জানিয়েছেন খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলাররা।
টেপাখড়িবাড়ী ইউনিয়নের সুবিধাভোগী মো. ফরহাদ হোসেন, খবির উদ্দিন, আবুল কালামসহ একাধিক ব্যক্তি জানান, আগে ১০ টাকা কেজি দরে চাল নিয়েছে। সেগুলো অনেক ভালো ছিল; কিন্তু ১৫ টাকা কেজি নিচ্ছে তবুও পুরোনো, পচা, দুর্গন্ধ ও পোকাযুক্ত চাল দেওয়া হচ্ছে। ডিলারকে বলেছি। তিনি জানিয়েছেন তার কিছু করার নেই। যে চাল আসে, তিনি সেই চালই বিক্রি করেন।
দক্ষিণ খড়িবাড়ী গ্রামে রাশিদা বেগম বলেন, ‘মুই গরিব মানসি। হামার শেখের বেটি হাসিনা মাই অল্প টাকাত চাউল দিছে। সেই চাউলের ভাত খাবারে পাওনা। চাউলে পোকা, পচা, গোন্ধ আইসে। মানসি গিলার এত্তি (ডিলারের কাছে) আসনুং। ওমা তো ফিরি দেইল।’
এ ছাড়া উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ডিলার পয়েন্টগুলোয় ভালো চালের আশায় তারা প্রতিবাদ করে আসছেন; কিন্তু বিষয়টি নজরে নিচ্ছে না সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। আর পচা চাল ফেরত দিতে ক্রেতারা গেলে উল্টো ডিলারের অসদাচরণের শিকার হচ্ছেন সুবিধাভোগীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ডিলার জানান, খাদ্যগুদাম থেকে আমাদের বিক্রয় পয়েন্টে যে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে, বেশির ভাগেই পোকা, ভাঙা ও ছত্রাকযুক্ত। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি; কিন্তু তাতেও প্রতিকার পাচ্ছি না।
উপজেলা খাদ্য ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-এলএসডি) কাজল রেখা বলেন, গোডাউন থেকে যে চাল সরবরাহ করা হয়েছে, সে চালে কোনো পোকা ছিল না। পরে পোকা আসতে পারে। আর খাদ্যদ্রব্যে পোকা আসবে এটিই স্বাভাবিক। তার কিছু পরেই তিনি বলেন, দু-একটা বস্তায় পোকা থাকতে পারে।
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এনামুল হক বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। এলএসডির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।
নীলফামারী জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) হারুন-অর-রশিদ বলেন, নিম্নমানের চালের ব্যাপারে কোনো উপকারভোগী বা ডিলার কিছুই জানাননি। উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক এবং এলএসডির সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।