পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ভূমি অফিসের চেইনম্যান বজলুর রহমানের ঘুষ নেওয়ার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। গতকাল বুধবার ওই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, চেইনম্যান বজলুর রহমান এক ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে গুনছেন। টাকা গুনে শেষ করার পর হাসিমুখে তা পকেটে রাখছেন।
৩৪ সেকেন্ডের ওই ভিডিও নিয়ে তীব্র সমালোচনা চলছে। পোস্টে রাজীব নামে একজন কমেন্টে লিখেছেন, ‘সামনে ঈদ, টাকা লাগবে’। ইলিয়াস হোসেন নামে একজন লিখেছেন, ‘ওনাকে আইনের আওতায় আনা হোক’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত একাধিক ব্যক্তি জানান, নামজারি করার জন্য ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা নেওয়া হয় বাউফল ভূমি অফিসে। ঘুষের টাকা নিজ হাতে আদায় করেন চেইনম্যান বজলু। টাকা আদায় ও অফিসের সব ফাইল নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বজলুর রহমানকে। এর জন্য তাকে চেয়ার, টেবিলসহ একটি কক্ষ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। উপজেলা সহকারী কমিশনারের (ভূমি) একান্ত আস্থাভাজন হিসেবেও তার খ্যাতি রয়েছে। অফিসের স্বঘোষিত কর্মকর্তা হিসেবে বজলুরের দাপটের কাছে অসহায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা বলেন, নামজারি করার সব ফাইল ও খরচ বজলুর কাছে দিতে হয়। এ এবং বি ক্যাটাগরি হিসাব করে বজলু প্রতিটি ফাইলের জন্য ঘুষ দাবি করেন। ঘুষের টাকা না দিলে নামজারি করা হয় না।
কয়েকদিন আগে বাউফলের অবসরপ্রাপ্ত স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. শাহ আলম ভূমি অফিসের অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধন করেছিলেন।
চেইনম্যান বজলুর রহমান বলেন, আমি কোনো ফাইলের দায়িত্বে নেই। ঘুষ বা অনৈতিকভাবে কারও কাছ থেকে টাকা নেওয়ার ঘটনা সত্য নয়। উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) বায়েজিদুর রহমান বলেন, সিটিজেন চার্টার অনুযায়ী নির্ধারিত ফি নিয়ে নামজারি করা হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওর বিষয়ে কেউ সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।