
কলেজে থাকতে একদিন মাঠে কিছু সুবিধাবঞ্চিত শিশুর পড়ালেখার দৃশ্য দেখেন সাজ্জাদ। ছবিটা মনে গেঁথে যায়। সিদ্ধান্ত নেন, নিজেকেও কিছু করতে হবে; কিন্তু কলেজে থাকতে সুযোগটা আর হয়ে ওঠেনি। ভাবলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ পেলে এ কাজ ঠিকই শুরু করবেন।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগে ভর্তি হওয়ার পর আর দেরি করেননি সাজ্জাদ। পথশিশুদের উন্নয়নে কাজ করা কাম ফর রোড চাইল্ডের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার প্রতিষ্ঠাকালীন সভাপতি হন তিনি।
এখন এই সংগঠনের ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখায় ৪৬ পথশিশু পড়ছে। সপ্তাহে ৬ দিনই চলে শিক্ষা কার্যক্রম। আর জার্মানিতে বসেও তাদের জন্য যতটা সম্ভব কাজ করছেন সাজ্জাদ।
কাম ফর রোড চাইল্ড ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার বর্তমান সভাপতি রনি সাহা বলেন, ‘২০১৬ সাল থেকে ইবিতে সিআরসি কার্যক্রম শুরু করে। ক্যাম্পাসে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রম যেমন, শীতার্ত পথশিশুদের শীতবস্ত্র বিতরণ, ঈদ উপহার বিতরণসহ বিভিন্ন কাজ আমরা করে যাচ্ছি।’
সাজ্জাদের স্বপ্ন ছিল বিদেশে উচ্চশিক্ষা নেবেন। স্বপ্ন পূরণে কাজ করে গেছেন নিভৃতে। স্নাতক শেষ করে প্রস্তুতি নেওয়ার এই গ্যাপে কিছু বাধার মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। কিছুতেই কিছু হবে না, এমন কথা বারবার শুনলেও পিছু হটেননি। আর সেই ধারাবাহিকতাতেই সাজ্জাদ আজ জার্মানির অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিভার্সিটি অব বায়রয়েথের শিক্ষার্থী। সেখানে মাস্টার্স পড়ছেন তিনি। সেখানে বসেও দেশের পথশিশুদের জন্য কাজ করে যাচ্ছেন নানাভাবে।
সাজ্জাদ বলেন, ‘একটি সামাজিক সংগঠন চালানো বেশ কঠিন। ফান্ডও দরকার। এখন আমাদের কাম ফর রোড চাইল্ড জার্মান শাখা রয়েছে। আমি শাখাটা নিয়ে আরও কাজ করতে চাই। বাংলাদেশ থেকে সব পথশিশু নির্মূলের যে স্বপ্ন আমাদের, সেটি বাস্তবায়নে আরও বহুদূর এগিয়ে যেতে চাই।’
মূলত বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য অনার্সের তৃতীয় বর্ষে থাকতেই নড়েচড়ে বসেন সাজ্জাদ। কয়েকজন মিলে গ্রুপ করে চালান আইইএলটিএসের চর্চা। জার্মানিতে মূলত দুটি সেশনে শিক্ষার্থী ভর্তি করানো হয়—সামার ও উইন্টার। সাজ্জাদ উইন্টারে আবেদন করেন।
দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ার সুযোগ হয় তার। সেখান থেকে বায়রয়েথকে বেছে নেন। এর জন্য সাজ্জাদকে বাংলাদেশে অবস্থিত জার্মান দূতাবাসে সাক্ষাৎকারও দিতে হয়েছিল।