
চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণের নওগাঁ গ্রামের ছেলে নাফিস উল হক সিফাত। হাসান আলী সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাস করেন তিনি। এরপর চাঁদপুর সরকারি কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। এখন পড়ছেন উচ্চমাধ্যমিক দ্বিতীয় বর্ষে।
শৈশব থেকেই স্বপ্ন ছিল কম্পিউটার সায়েন্স নিয়ে পড়ার। তাই নিয়মিত গণিত অলিম্পিয়াডসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন নাফিস। ইন্দোনেশিয়ায় অনুষ্ঠিত আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াড ইন ইনফরমেটিক্স ২০২২-এ ব্রোঞ্জ পদক জিতেছিলেন। ২০২১ সালের সিঙ্গাপুরের একটি আন্তর্জাতিক অলিম্পিয়াডেও পদক জেতেন। নাফিস ডিসেম্বরের শেষের দিকে আবেদন করেন এমআইটিতে। চলতি মাসের ১৪ তারিখ হাতে পান অফার লেটার।
এমআইটিতে চান্স পাওয়ার প্রসঙ্গে নাফিস বলেন, এখানে ধরাবাঁধা নির্দিষ্ট কোনো যোগ্যতা লাগে না। সাধারণত এইচএসসি বা সমমানের পরীক্ষার্থী বা পরীক্ষা দিয়ে ফেলেছে এমন যে কেউ আবেদন করতে পারেন। এমআইটিতে আবেদন করতে স্যাট পরীক্ষা দিতে হয়। তবে যেহেতু বেশিরভাগ আবেদনকারীরই দেখা যায় একাডেমিক ও স্যাট স্কোর ভালো থাকে, তাই সঙ্গে এক্সট্রা কারিকুলাম অ্যাক্টিটিভিটি যেমন—অলিম্পিয়াড, বিতর্ক এসব গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। আমার চেনা যতজন বাংলাদেশ থেকে এমআইটিতে সুযোগ পেয়েছিলেন তাদের সবাই কোনো না কোনো অলিম্পিয়াডে পদকজয়ী।
আবেদনের ধাপগুলো সম্পর্কে নাফিস জানান, প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব একটি পোর্টাল আছে। সেখানে নিজের সব তথ্য যেমন—সাফল্য, অর্জন, কর্মকাণ্ড ও স্যাটসহ অন্যান্য টেস্টের স্কোর দিতে হয়। তা ছাড়া কিছু রিকমেন্ডেশন লেটার লাগে। সেগুলোর জন্য পোর্টাল থেকেই রিকমেন্ডরদের ইনভাইট দেওয়া যায়। তারপর সব গুছিয়ে প্রোফাইল সাবমিট দিলেই হয়। পরে অনেক সময় ইন্টারভিউর জন্য ডাকাও হতে পারে।
এমআইটিতে পড়তে আগ্রহীদের সম্পর্কে তার পরামর্শ হলো—পড়াশোনার পাশাপাশি বিজ্ঞানবিষয়ক বিভিন্ন চর্চা যেমন: অলিম্পিয়াড, গবেষণা এসব খুব কাজে আসবে। নিজের পছন্দের বিষয় খুঁজে নিয়ে সেটার ওপর একাডেমিক পড়ার বাইরে আরও উন্নতি করতে হবে।
নাফিসের মা–বাবা দুজনেই শিক্ষকতা করেন। বাবা মো. নাসির উদ্দিন মতলব রয়মনেনসা মহিলা কলেজের শিক্ষক, মা আছেন কামরুন নাহার হাজীগঞ্জ মডেল কলেজে।
গত ১৭ জানুয়ারি সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন ও ও জাতীয় শিশু দিবস উপলক্ষে চাঁদপুর সরকারি কলেজে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নাফিসকে ফুল দিয়ে বরণ করেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
নাফিসকে সংবর্ধনা দিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নাফিস শুধু চাঁদপুরের নয়, পুরো বাংলাদেশের গর্ব। কারণ, নাফিস এ দেশের মুখ উজ্জ্বল করেছে।’