
ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় বাখমুত শহরে কিছুদিন ধরে রাশিয়ার সেনাদের সঙ্গে তীব্র লড়াই চলছে। শহরটিতে গত ২৪ ঘণ্টায় দুই দেশই প্রতিপক্ষের বহু সেনা হতাহতের দাবি করেছে। ইউক্রেন বলছে, তাদের হামলায় রাশিয়ার পাঁচ শতাধিক সেনা হতাহত হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, তাদের হামলায় ইউক্রেনের ২১০ সেনা নিহত হয়েছে। তবে এসব দাবি সত্যতা নিশ্চিত করতে পারেনি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। খবর আলজাজিরার।
টানা এক বছরের বেশি সময় ধরে ইউক্রেনে আগ্রাসন চালাচ্ছে রাশিয়া। তবে সম্প্রতি ইউক্রেনের একটি শহরকে ঘিরে আক্রমণ জোরালো করেছে রুশ বাহিনী। অন্যদিকে পাল্টা হামলার মাধ্যমে প্রতিরক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে ইউক্রেনও। এ পরিস্থিতিতে ইউক্রেন ও রাশিয়া দাবি করেছে, বাখমুত শহরের লড়াইয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় শত শত শত্রু সৈন্য নিহত হয়েছে। এ ছাড়া ইউক্রেনীয় সেনারা রাশিয়ার অবিরাম আক্রমণ প্রতিরোধ করছে বলেও দাবি করেছে কিয়েভ।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর মুখপাত্র সের্হি চেরেভাতি গণমাধ্যমকে বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় বাখমুত শহরে তাদের হামলায় ২২১ রুশ সেনা নিহত হয়েছে। এ ছাড়া আরও তিন শতাধিক রুশ সেনা আহত হয়েছে। সব মিলে পাঁচ শতাধিক রুশ সেনা হতাহত হয়েছে। অন্যদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বলেছে, দোনেৎস্কে তাদের হামলায় ইউক্রেনের ২১০ সেনা নিহত হয়েছে। মূলত ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় দোনেৎস্কের বাখমুত শহরটি বছরব্যাপী যুদ্ধের সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী এবং দীর্ঘতম যুদ্ধের স্থান বলে বিবেচিত হচ্ছে। এ ছাড়া জোরদার রুশ হামলা এবং ইউক্রেনের প্রতিরোধের জেরে এ শহরটি এখন প্রায় জনশূন্য।
রুশ হামলায় শহরটির এমন কোনো ভবন নেই যা আংশিক হলেও বিধ্বস্ত হয়নি। কিছুদিন আগে রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার গ্রুপ দাবি করে, তারা বাখমুতকে প্রায় নিয়ন্ত্রণে নিয়ে এসেছে। ইউক্রেন অবশ্য তাদের এ দাবি নাকচ করে দিয়ে বলেছে, বাখমুত এখনো কিয়েভের কবজায় রয়েছে। এ অবস্থায় কেউ কাউকে ছাড় না দিয়ে দুপক্ষই সেখানে হামলা জোরদার করে। সপ্তাহখানেক আগে সেখান থেকে শত শত বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয় ইউক্রেন কর্তৃপক্ষ।
ব্রিটিশ সামরিক গোয়েন্দারা শনিবার বলেন, রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার গোষ্ঠী বাখমুতের পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ অংশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে। চলমান যুদ্ধে এটি রাশিয়ার জন্য বেশ বড় অর্জন, যা গত বুধবার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিন দাবি করেন। ব্রিটিশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তার দৈনিক গোয়েন্দা বুলেটিনে বলেছে, ‘শহরের কেন্দ্রে, বখমুতকা নদী এখন সম্মুখসমরের স্থানে পরিণত হয়েছে।’