
ইরান ও সৌদি আরব দীর্ঘদিনের বিরোধের পর কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনে একমত হয়েছে। এ দুই দেশের বৈরী সম্পর্ক উত্তেজনা বাড়িয়েছে মধ্যপ্রাচ্যে। সিরিয়া ও ইয়েমেনে সংঘাতকে গভীর করেছে। অবশেষে বেশ কিছুদিনের আলোচনার পর গত শুক্রবার এ দুটি দেশ আবার সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়। এ নিয়ে সৌদি আরব ও ইয়েমেনের মধ্যে একটি চুক্তিও হয়। এ চুক্তিকে তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচিতে লাগাম টানার সম্ভাব্য পথ আর ইয়েমেনে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিতের সুযোগ হিসেবে দেখছেন বিশ্লেষকরা। খবর রয়টার্সের।
এমন এক সময়ে সৌদি আরবের সঙ্গে এই চুক্তি হলো, যখন তেহরানের পারমাণবিক বোমা অর্জন আটকাতে ২০১৫ সালে তাদের সঙ্গে হওয়া ছয় বিশ্বশক্তির চুক্তি পুনরুজ্জীবনে যুক্তরাষ্ট্রের দুই বছরের ব্যর্থ চেষ্টার মধ্যে ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির গতি বাড়িয়েছে। ইরানজুড়ে সাম্প্রতিক বিক্ষোভে কর্তৃপক্ষের সহিংস দমনপীড়ন ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগে তেহরানের ওপর কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে তাদের এই প্রচেষ্টা খানিকটা ব্যাহত হয়েছে। মিডল ইস্ট ইনস্টিটিউটের ব্রায়ান কাতুলিস বলেন, সুন্নি ও শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের চুক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলকে ইরানের পারমাণবিক ইস্যু নিয়ে থমকে থাকা আলোচনা নতুন করে শুরুর ‘সম্ভাব্য একটি পথ করে দিতে পারে’, কেননা এবার তারা রিয়াদকেও সম্ভাব্য অংশীজন হিসেবে ধরতে পারবে। তিনি বলেন, সৌদি আরব ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। যদি দুই দেশের মধ্যে নতুন চুক্তিটিকে অর্থবহ ও প্রভাবশালী করতে হয়, তাহলে রিয়াদকে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে তার উদ্বেগের বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে হবে। না হলে এই চুক্তি কেবলই নামকাওয়াস্তে থেকে যাবে। তবে এ বিষয়ে তিনি আশার আলো দেখছেন বলে জানান। শুক্রবারের চুক্তি ইয়েমেনে শান্তি টেকসই করার সম্ভাবনাও বাড়াচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে দেশটিতে চলে আসা সংঘাতকে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে ছায়া যুদ্ধ হিসেবেই দেখা হচ্ছিল। জাতিসংঘের মধ্যস্থতায় গত বছরের এপ্রিলে ইয়েমেনের বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়েছিল, অক্টোবরে চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হয়।