
বিশ্বের সাত অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশের নেতারা দ্রুত ইউক্রেন থেকে রুশ সেনা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন। জাপানের হিরোশিমায় গতকাল শুক্রবার শুরু হওয়া জি-৭-এর শীর্ষ সম্মেলনে তারা এ দাবি জানান। সম্মেলনে বিশ্বনেতারা ইউক্রেন যুদ্ধ ঘিরে রাশিয়ার ওপর নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়েও একমত হন। জি-৭-এর বার্ষিক এ সম্মেলনে এবারের মূল আলোচ্য বিষয় ইউক্রেন যুদ্ধ। সম্মেলনের শেষ দিন রোববার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিও উপস্থিত থাকবেন। খবর বিবিসির।
সম্মেলনে মূল আলোচ্যসূচিতে ইউক্রেন যুদ্ধ ছাড়াও জলবায়ু পরিবর্তন, খাদ্য নিরাপত্তা ও পরমাণু নিরাপত্তার বিষয়গুলো প্রাধান্য পাবে। তবে প্রথম দিনই জি-৭-ভুক্ত অর্থনৈতিক শক্তিধর দেশ যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, জার্মানি, ব্রিটেন, ফ্রান্স, কানাডা ও ইতালি ইউক্রেন যুদ্ধ কেন্দ্র করে রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে একমত হয়েছে। এ-সংক্রান্ত এক বিবৃতিতে বলা হয়, আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত ইউক্রেনের সীমানা থেকে শিগগির, নিঃশর্তভাবে সব রুশ সেনা প্রত্যাহার করতে হবে। সম্পূর্ণ রুশ সেনা প্রত্যাহার ছাড়া সেখানে শান্তি প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয়। আমরা এখানে সবাই ইউক্রেনে রাশিয়ার অন্যায় ও উসকানিমূলক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। জি-৭ দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে একমত হয়েছে বলেও বিবৃতিতে জানানো হয়। দেশটিতে রপ্তানির ক্ষেত্রেও নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে রুশ কোম্পানি, ব্যাংক ও ব্যক্তিদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এর আগে শুক্রবার সম্মেলনে অংশ নিতে জাপান পৌঁছে হিরোশিমায় ৭৮ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক হামলায় নিহতদের স্মরণে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান জি-৭ নেতারা। জি-৭ সম্মেলন সামনে রেখে বৃহস্পতিবার এক মার্কিন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের বলেন, রাশিয়া যেন যুদ্ধক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী সরঞ্জাম না পায়, তা নিশ্চিত করা; নিষেধাজ্ঞা এড়াতে রাশিয়ার যে ফাঁকফোকরগুলো আছে, সেগুলো বন্ধ করা; রাশিয়ার জ্বালানির ওপর আন্তর্জাতিক নির্ভরতা কমানো এবং মস্কো যেন আন্তর্জাতিক আর্থিক ব্যবস্থায় সুবিধা কম পায়, তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নতুন নিষেধাজ্ঞাগুলো দেওয়া হবে।
২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের মিত্রদেশগুলো রাশিয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। এখন পর্যন্ত রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, বিভিন্ন আর্থিক খাত, ব্যবসায়ীসহ হাজারো নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে ওয়াশিংটন। মস্কোকে আর্থিক সুবিধা দিচ্ছে এবং তাদের সক্ষমতা বাড়াচ্ছে, এমন প্রায় ৩০০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার কথা ভাবছে যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার অর্থনীতির আরও বিভিন্ন খাতকে নিষেধাজ্ঞার আওতাভুক্ত করতে পারে ওয়াশিংটন।