সংলাপই যুদ্ধ বন্ধের একমাত্র পথ
বিশ্ববেলা ডেস্ক
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, সংলাপ ও কূটনীতিই ইউক্রেন যুদ্ধের সমাধানের একমাত্র পথ। গতকাল রোববার জাপানের হিরোশিমায় জি-৭ সম্মেলনে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। একই সঙ্গে তিনি বলেন, এ যুদ্ধ শুধু রাজনীতি ও অর্থনীতির কোনো বিষয় নয়। এটা মানবতার বিষয়। খবর হিন্দুস্তান টাইমসের।
নরেন্দ্র মোদি তার বক্তব্যে বলেন, আজ বিশ্বের প্রতিটি দেশই একটি আরেকটির সঙ্গে যুক্ত। কাজেই এক অঞ্চলে উত্তেজনা দেখা দিলে তার প্রভাব অন্য অঞ্চলে গিয়েও পড়ে। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশ, যাদের সীমিত সম্পদ রয়েছে তারা যুদ্ধের কারণে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যুদ্ধের কারণে বর্তমানে বিশ্বে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে তার কারণে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে খাদ্য, জ্বালানি ও সার সংকট দেখা দিয়েছে। তাই আমাদের সবার একটাই লক্ষ্য। আর তা হলো বৈশ্বিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি। তিনি আরও বলেন, প্রতিটি দেশেরই জাতিসংঘ সনদ, আন্তর্জাতিক আইন, কোনো দেশের সার্বভৌমত্ব ও অখণ্ডতার প্রতি শ্রদ্ধা থাকা উচিত। সবশেষে তিনি আবারো এ যুদ্ধ নিরসনে সংলাপ ও কূটনীতির ওপর জোর দেন।
এর আগের দিন শনিবার সম্মেলনের এক ফাঁকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়েই তাদের মধ্যে বেশি কথা হয়। মোদি এ সময় যুদ্ধ বন্ধে তার পক্ষ থেকে যা যা করা দরকার বলে জেলেনস্কিকে আশ্বস্ত করেন। উল্লেখ্য, বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তিধর সাত দেশের জোট জি-৭-এর এবারের বার্ষিক সম্মেলনের প্রধান আলোচ্য বিষয় ইউক্রেন যুদ্ধ। গত শুক্রবার সম্মেলন শুরুর প্রথম দিনই এ যুদ্ধকে ঘিরে রাশিয়ার ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়ে একমত হন নেতারা। সেইসঙ্গে ইউক্রেনকে এফ-১৬ যুদ্ধবিমান দেওয়ার বিষয়েও একমত হন তারা। যুদ্ধ থামাতে রাশিয়ার ওপর চাপ প্রয়োগ করতে চীনের প্রতি আহ্বানও জানানো হয়। সম্মেলনে জেলেনস্কি সরাসরি অংশগ্রহণ করায় এবার তা বাড়তি মনোযোগ কাড়ছে। সম্মেলনের ফাঁকে তিনি বিভিন্ন নেতার সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠকও করেন। সম্মেলনে যুদ্ধকে ঘিরে ইউক্রেনের প্রতি অকুণ্ঠ সমর্থন জানান জি-৭ নেতারা। সম্মেলনের শেষ দিন রোববার মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ইউক্রেনকে নতুন করে ৩৭ কোটি ডলারের বেশি সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দেন। তবে গতকাল চীনকে একহাত নেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক। তিনি বলেন, বৈশ্বিক সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের যুগে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চীন। কারণ চীন নিজ দেশ ও দেশের বাইরে কর্তৃত্ববাদী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। যে কোনো মূল্যে তার এ ভূমিকায় লাগাম টানতে হবে। চীনের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্য কীভাবে কমিয়ে আনা যায় তা নিয়ে সম্মেলনে আলোচনা হয়েছে বলেও তিনি জানান। জি-৭ নেতারা পারমাণবিক নিরস্ত্রীকরণ ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতেও শেষ দিন কথা বলেন।