প্রায় সাত বছর বন্ধ থাকার পর আবারও কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে সম্মত হয়েছে সৌদি আরব ও ইরান। কয়েক দিনের আলোচনার পর অবশেষে দূতাবাস ফের চালু করতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। মধ্যপ্রাচ্যের মুসলিমপ্রধান ও তেলসমৃদ্ধ দুই দেশের এই পুনর্মিলন বিশ্বব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে, তা বলাবাহুল্য। এ নিয়ে বিভিন্ন দেশ এরই মধ্যে নিজেদের মতামত জানিয়েছে। খবর আলজাজিরার।
যুক্তরাষ্ট্র : সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকলেও ইরানের সঙ্গে দা-কুমড়ার সম্পর্ক যুক্তরাষ্ট্রের। এ ধরনের দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জন কিরবি বলেছেন, কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃস্থাপনের জন্য ইরানের সঙ্গে আলোচনার বিষয়ে ওয়াশিংটনকে অবহিত করেছিল সৌদি আরব। কিন্তু এ প্রক্রিয়ায় সরাসরি জড়িত ছিল না যুক্তরাষ্ট্র। তিনি বলেন, উত্তেজনা প্রশমন ও কূটনৈতিক আলোচনা হলো প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের নীতির মূলস্তম্ভ।
ইরাক : ২০২১ সাল থেকে সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে বেশ কয়েকবার পুনর্মিলন সংক্রান্ত আলোচনার আয়োজন করে ইরাক। সেগুলো সফল হয়নি। অবশেষে গত কয়েক দিনের সেই প্রচেষ্টা সফল হওয়ার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে ইরাক। ইরাকি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, দুই দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায়ের সূচনা হলো।
সংযুক্ত আরব আমিরাত : ইরান-সৌদি চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন সংযুক্ত আরব আমিরাতের কূটনৈতিক উপদেষ্টা আনোয়ার গারগাশ। তিনি বলেন, এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে ইতিবাচক যোগাযোগ ও সংলাপের গুরুত্বে বিশ্বাস করে আমিরাত।
ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহী : ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুথি আন্দোলনের প্রধান আলোচক মোহাম্মদ আবদুল সালাম বলেন, মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক প্রয়োজন। তিনি বলেন, বিদেশি হস্তক্ষেপের ফলে হারানো নিরাপত্তা পুনরুদ্ধার করতে এ অঞ্চলের দেশগুলোর মধ্যে স্বাভাবিক সম্পর্ক প্রয়োজন।
লেবাননের হিজবুল্লাহ : লেবাননের শক্তিশালী সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরাল্লাহ বলেন, তার সমর্থক ইরান এবং দীর্ঘদিনের প্রতিদ্বন্দ্বী সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন একটি ‘ভালো অগ্রগতি’।
ওমান : রিয়াদ ও তেহরানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রবর্তনের বিষয়ে যৌথ ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে ওমান। দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, এটি সবার জন্যই বিজয়। এই পদক্ষেপ আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক নিরাপত্তাকে উপকৃত করবে।
কাতার : পুনর্মিলন চুক্তিকে স্বাগত জানাতে ইরান ও সৌদি আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের ডেকেছেন কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুল রহমান আল-থানি।
মিশর : মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, কায়রো আশা করে, ইরান-সৌদির চুক্তিটি মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা কমাতে অবদান রাখবে।
বাহরাইন : সৌদি আরব ও ইরানের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছে বাহরাইনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
এ চুক্তি আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি স্থাপনে বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করে দেশটি।
তুরস্ক : সৌদির রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ইরানের সঙ্গে চুক্তির পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করে স্বাগত জানিয়েছেন তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
