
জাল নথিপত্রে রপ্তানির আড়ালে ১ হাজার ৭৮০ চালানের বিপরীতে চার প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ৩৮২ কোটি টাকা পাচারের প্রমাণ পেয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো সাবিহা সাকি ফ্যাশন, এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন, ইমু ট্রেডিং করপোরেশন ও ইলহাম। প্রতিষ্ঠানগুলো টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, ব্যাগ, পোলো শার্ট, জ্যাকেট, প্যান্ট, হুডি জাতীয় পণ্য সাত দেশে রপ্তানি করেছে।
গতকাল রাজধানীর কাকরাইলে সংস্থাটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) মোহাম্মদ ফখরুল আলম। তিনি বলেন, প্রথমে সাবিহা সাকি ফ্যাশনের জালিয়াতির অভিযোগ তদন্তের পর বিষয়টি প্রমাণ হয়। এর ধারাবাহিকতায় আরও তিন প্রতিষ্ঠানের অর্থ পাচারের তথ্য পাই। তাদের কোনো এলসি ছিল না। ব্যবহার করেছে রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানের ইএক্সপি।
তিনি বলেন, অর্থ পাচারের জন্য রপ্তানির সময় জালিয়াতি চক্র পণ্যমূল্য কম দেখানোর চেষ্টা করে। কারণ, পণ্যের বিপরীতে টাকা আর দেশে আসবে না।
প্রতিষ্ঠানগুলো টি-শার্ট, টপস, লেডিস ড্রেস, ট্রাউজার, বেবি সেট, ব্যাগ, পোলো শার্ট, জ্যাকেট, প্যান্ট, হুডি প্রভৃতি পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া, সিঙ্গাপুর, কাতার, যুক্তরাজ্য, সৌদি আরব, নাইজেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানির মাধ্যমে অর্থ পাচার করে। প্রতিষ্ঠানগুলোর সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট লিমেক্স সিপার্সের আইডি নম্বর এরই মধ্যে লক করা হয়েছে। আরও কিছু প্রতিষ্ঠান এ ধরনের কার্যক্রমে জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। এর ভিত্তিতে বর্তমানে তদন্ত চলছে।
শুল্ক গোয়েন্দা জানায়, সাবিহা সাকি ফ্যাশন রপ্তানি দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য রপ্তানি করে। কিন্তু রপ্তানি মূল্য বা বৈদেশিক মুদ্রা দেশে আসেনি। গত ৩১ জানুয়ারি শুল্ক গোয়েন্দার একটি টিম চট্টগ্রামের উত্তর পতেঙ্গা অভিযান পরিচালনা করে। প্রতিষ্ঠানটির ঘোষণাবহির্ভূত পণ্য রপ্তানির প্রমাণ পাওয়া যায়। তদন্তে দেখা গেছে, সাবিহা সাকি ফ্যাশন মোট ৮৬ পণ্য চালানের বিপরীতে ৯৯৭ টন পণ্য রপ্তানি করে। এর বিনিময় মূল্য ১৮ লাখ ৪৫ হাজার ৭২৭ মার্কিন ডলার বা ২১ কোটি টাকা। আর ওই টাকা দেশে আসার সুযোগ নেই। অন্যদিকে এশিয়া ট্রেডিং করপোরেশন ১ হাজার ৩৮২ চালান রপ্তানি করে। চালানগুলোতে ছিল ১৪ হাজার ৮৫ টন পণ্য। এর বিনিময় মূল্য ২ কোটি ৫৮ লাখ ২৬ হাজার ৮৬৬ মার্কিন ডলার বা ২৮২ কোটি টাকা। ইমো ট্রেডিং করপোরেশন জালিয়াতির মাধ্যমে ২৭৩ পণ্য চালান রপ্তানি করে। চালানগুলোতে ছিল ২ হাজার ৫২৩ টন পণ্য। এর বিনিময় মূল্য ৬৫ লাখ ৪ হাজার ৯৩২ মার্কিন ডলার বা ৬২ কোটি টাকা।
আর ইলহাম প্রতিষ্ঠানটি রপ্তানি দলিল জালিয়াতির মাধ্যমে ৩৯ চালান রপ্তানি করে। চালানগুলোতে প্রতিষ্ঠানটি ৬৬০ টন পণ্য রপ্তানি করে। এর বিনিময় মূল্য ১৬ লাখ ৩৯ হাজার ৪৮৫ মার্কিন ডলার বা ১৭ কোটি টাকা।