
বর্তমানে দেশে ডিজিটাল অর্থনীতিতে অভাবনীয় বিপ্লব এসেছে। এরই অংশ হিসেবে ব্যাংকিং সেবার বাইরে থাকা বিপুল জনগোষ্ঠীকে এ সেবার আওতায় নিয়ে এসেছে মোবাইল ও এজেন্ট ব্যাংকিং। ব্যাংকিং সেবার আরও প্রসারে এসব সেবা আরও বড় ভূমিকা পালন করবে। এমনকি স্বল্প সুদ ও অন্যান্য সুবিধার কারণে এক সময় ক্ষুদ্র ঋণদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর জায়গা নিতে পারে এ সেবাগুলো। আর ডিজিটাল লেনদেনের মাধ্যমে আর্থিক অনিয়মও অনেকাংশে কমানো সম্ভব।
গতকাল পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত ‘ডিজিটাল আর্থিক সেবার সুযোগ ও সম্ভাবনা’ শীর্ষক এক ট্রেনিং অনুষ্ঠানে এসব কথা বলা হয়েছে। অনুষ্ঠানে পিআরআইয়ের চেয়ারম্যান ড. জায়েদি সাত্তার বলেন, ডিজিটাল অর্থনীতিতেও এখন বিপ্লব এসেছে। অর্থনীতির অনেক অংশ জুড়েই এখন মোবাইলের অবস্থান। আমার ধারণা, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সারা দেশে বেশিরভাগ লেনদেন সম্পন্ন হবে ক্যাশলেসের মাধ্যমে। আর মোবাইলের মাধ্যমে লেনদেন হলে তার একটা পদচিহ্ন রয়ে যায়, যার মাধ্যমে অনিয়ম-দুর্নীতি শনাক্ত করা আরও সহজ হবে।
অনুষ্ঠানে এজেন্ট ব্যাংকিংবিষয়ক এক গবেষণা প্রতিবেদনে পিআরআই নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, এজেন্ট ব্যাংকিং দেশের গ্রামাঞ্চলের পরিস্থিতি বদলে দিচ্ছে, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতেও তার প্রভাব আছে বলে মন্তব্য করেন আহসান এইচ মনসুর। তিনি আরও বলেন, গত পাঁচ দশকে দারিদ্র্য দূরীকরণে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। কিন্তু মানুষের পক্ষে ঋণ পাওয়া ছিল বড় কঠিন। ক্ষুদ্র ঋনদানকারী প্রতিষ্ঠানের সুদহার অনেক বেশি হওয়ায় মানুষের পক্ষে সেই ঋণ নেওয়া কঠিন। সে সমস্যা নিরসনে এজেন্ট ব্যাংকিং বড় ধরনের সমাধান নিয়ে এসেছে, দেশজুড়ে স্বল্প সুদে ঋণ দিচ্ছে তারা।
গবেষণায় দেখা গেছে, প্রথাগত শাখা ব্যাংকিংয়ের চেয়ে এজেন্ট ব্যাংকিং অনেক সাশ্রয়ী। লেনদেন প্রতি স্থায়ী খরচ অনেকটাই কম, ফলে স্বল্প আমানতসম্পন্ন হিসাব থেকে ঘন ঘন লেনদেন করা হলেও মুনাফার হার ভালোই থাকে।
করোনার সময় দেখা গেছে, প্রথাগত ব্যাংকিং নানা চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলেও এজেন্ট ব্যাংকিং সচল ছিল। এ ছাড়া এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নারী গ্রাহক অনেকটাই বেড়েছে। সাংস্কৃতিক কারণে নারীদের চলাচল যেসব অঞ্চলে সীমিত, এজেন্ট ব্যাংকিং সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তির আওতায় নিয়ে এসেছে।