বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ দেখতে চায় এডিবি

এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)
এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)

দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তি মূল্যায়ন করে অগ্রযাত্রার অন্যতম উন্নয়ন সহযোগী এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) আগামীর বাংলাদেশকে আরও সমৃদ্ধ দেখতে চায়। সংস্থাটির আশা, এই সমৃদ্ধি হবে টেকসই ও অন্তর্ভুক্তিমূলক। আর এই কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে আস্থাভাজন বাংলাদেশকে সামনের দিনগুলোতে আর্থিক সহায়তা আরও বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছে এই উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাটি।

গতকাল মঙ্গলবার এমন প্রতিশ্রুতিই দেন এডিবির প্রেসিডেন্ট মাসাতসুগু আসাকাওয়া। বর্তমানে বাংলাদেশ ও এডিবির অংশীদারত্বের ৫০ বছর উদযাপন উপলক্ষে ঢাকা সফরে রয়েছেন এই সংস্থাপ্রধান।

রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ ও এডিবির ৫০ বছরপূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে সংস্থার পক্ষ থেকে দেওয়া বক্তব্যে এডিবিপ্রধান জানান বাংলাদেশের সঙ্গে অংশীদারত্ব প্রসারিত করার কথা। তিনি বলেন, ২০৩১ সালের মধ্যে উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য অর্জনে বাংলাদেশকে সব ধরনের সহায়তা করার জন্য প্রস্তুত এডিবি। মূল উন্নয়ন অগ্রাধিকারের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা বাড়াতেও এডিবি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে ও বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি গড়তে ঋণ দেবে এডিবি। এ ছাড়া অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণে গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কারের জন্যও কাজ করে যাওয়ার বিষয়ে সংস্থাটির অবস্থান পরিষ্কার করেন মাসাতসুগু আসাকাওয়া।

এডিবির প্রেসিডেন্ট বলেন, দেড় দশক ধরে বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের সম্পৃক্ততার মাধ্যমে স্থির ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশটির যে রূপান্তর হয়েছে সেটা এডিবি প্রত্যক্ষ করেছে। এডিবি চায় আরও সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক, টেকসই উন্নয়নের বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে এডিবির আগামীর কর্মপরিকল্পনাও সেভাবেই ঠিক করা হচ্ছে।

১৬ মার্চ পর্যন্ত তার ঢাকায় অবস্থানের কথা রয়েছে। আসাকাওয়া তার ৫ দিনের সফরের অংশ হিসেবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এবং অন্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। এ সময় বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করেন তিনি। বিশেষ করে গত দেড় দশকের অগ্রগতিতে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন তিনি।

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রশংসা করে মাসাতসুগু আসাকাওয়া বলেন, ২০১৩-২২ সালের মধ্যে বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) গড়ে প্রায় ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০১৯ সালে করোনা মহামারির ঠিক আগে প্রবৃদ্ধি ৭ দশমিক ৯ শতাংশে পৌঁছে। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মর্যাদা পেয়েছে। মাথাপিছু মোট জাতীয় আয় ১ হাজার ২১০ ডলারে পৌঁছে, যা ২০২২ সালের মধ্যে ২ হাজার ৭৯৩ ডলার হয়। বাংলাদেশ ২০২৬ সালের মধ্যে স্বল্পোন্নত দেশের মর্যাদা থেকে গ্র্যাজুয়েশন হওয়ার পথে রয়েছে।

সফরকালে এডিবি প্রধান চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেলওয়ে প্রকল্পের অধীনে একটি রেলস্টেশন ও এডিবি জরুরি সহায়তা প্রকল্পের অধীনে আশ্রয়প্রাপ্ত লোকদের জন্য কক্সবাজার ক্যাম্পে একটি পানি সরবরাহ সুবিধাসহ এডিবির অর্থে বাস্তবায়িত নানান প্রকল্প পরিদর্শন করবেন। এ ছাড়া তিনি একটি পোশাক কারখানা ও স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট প্রোগ্রামের অধীনে একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন, যা নারীদের কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অবদান রাখে।

উল্লেখ্য, ১৯৬৬ সালে এডিবি প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ ১৯৭৩ সালে এডিবিতে যোগ দেয়। ১৯৮১ সালে একটি মাঠ অফিস হোস্ট করার জন্য প্রথম এডিবি সদস্য হয়। বর্তমানে সংস্থাটির সদস্যভুক্ত দেশ ৬৮টি।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com