মোবাইল ব্যাংকিংয়ে রেকর্ড লেনদেন

বাংলাদেশ ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংক।পুরোনো ছবি

চলতি বছরের মার্চে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন হয়েছে সর্বোচ্চ ১ লাখ ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা। মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এখন আর শুধু টাকা পাঠানোতেই সীমাবদ্ধ নেই। বরং এর মাধ্যমে দৈনন্দিন কেনাকাটা, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিসহ বিভিন্ন বিল পরিশোধ ও মোবাইলে রিচার্জসহ নানা সেবা মিলছে। ফলে অব্যাহতভাবে বাড়ছে এর পরিধি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মোবাইল আর্থিক সেবার (এমএফএস) হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, মার্চে এ মাধ্যমে ১ লাখ ৮ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। এখন পর্যন্ত এক মাসের হিসাবে এটিই সর্বোচ্চ লেনদেন। এমএফএসের মাধ্যমে টাকা পাঠানো, উত্তোলন, বেতন-ভাতা সবকিছু মিলিয়ে আগের মাস ফেব্রুয়ারিতে লেনদেন হয়েছিল ৯৭ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা। সেই হিসাবে এক মাসে লেনদেন বেড়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।

২০২২ সালের এপ্রিলে একক মাস হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেন লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। লেনদেন হয় ১ লাখ ৭ হাজার ৪৬০ টাকা। বিকাশ, রকেট, এমক্যাশ, উপায়সহ দেশে বর্তমানে ১৩টি প্রতিষ্ঠান মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে আর্থিক সেবা দিচ্ছে। ডাক বিভাগের সেবা ‘নগদ’ একই ধরনের সেবা দেয়। তবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানটির মোবাইল ব্যাংকিং সেবা এই হিসেবে এতদিন অন্তর্ভুক্ত ছিল না। সেপ্টেম্বরে নগদকে মোবাইলে লেনদেনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

এমএফএসের কর্মকর্তারা বলেন, গত ২২ এপ্রিল ঈদ উদযাপন করা হয়েছে। ওই সময় বেশি লেনদেন হয়েছে। ঈদের আগের মাস মার্চে মানুষ কেনাকাটা বেশি করেছে, বেতন-বোনাস মোবাইল ব্যাংকিংয়ে দেওয়ায় লেনদেনে বেড়ে যায়। সব মিলিয়ে গত মার্চে রেকর্ড লেনদেন হয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, মোবাইল ব্যাংকিংয়ে লেনদেনের সঙ্গে বেড়েছে নিবন্ধিত গ্রাহক সংখ্যা। মার্চে নিবন্ধিত হিসাব ১৯ কোটি ৮০ লাখ ৯১ হাজার ৭৮৩, যা ফেব্রুয়ারিতে ছিল ১৯ কোটি ৬৭ লাখ ৫৯ হাজার ১৭১। এক মাসের ব্যবধানে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে হিসাব বেড়েছে ১৩ লাখ ৩২ হাজার ৬১২টি। এসব হিসাবের মধ্যে নারী গ্রাহকের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮ কোটি ৩১ লাখ ২ হাজার ৫৪৫। মার্চে মোবাইল ব্যাংকিংয়ে পাঠানো হয়েছে ৩৪ হাজার ৩০৮ কোটি টাকা। আর উত্তোলন করা হয়েছে ৩০ হাজার ৯৪০ কোটি টাকা। এমএফএস সেবায় ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি হিসাবে ৩১ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা লেনদেন হয়। বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বেতন-ভাতা বাবদ বিতরণ হয় ২ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা। বিভিন্ন পরিষেবার ২ হাজার ৩০৮ কোটি টাকার বিল পরিশোধ হয় এবং কেনাকাটার ৯ হাজার ৯৩৩ কোটি টাকা লেনদেন হয়।

লেনদেন উৎসাহিত করতে সম্প্রতি মোবাইল ব্যাংকিংয়ের লেনদেনের সীমা বাড়িয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এখন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের গ্রাহকরা দিনে এজেন্ট থেকে ৩০ হাজার টাকা এবং ব্যাংক হিসাব বা কার্ড থেকে ৫০ হাজার টাকা জমা করতে পারেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক ২০১০ সালে মোবাইল ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু করে। ২০১১ সালের ৩১ মার্চ বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবার মধ্য দিয়ে দেশে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসের যাত্রা শুরু হয়। এর পরই ব্র্যাক ব্যাংকের সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা চালু করে বিকাশ। বর্তমানে মোবাইল ব্যাংকিং বাজারের সিংহভাগই বিকাশের দখলে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com