কারখানা ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন

শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।
শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন।পুরোনো ছবি

কারখানা ব্যবস্থাপনায় দেশের তৈরি পোশাক শিল্প বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বলে দাবি করেছেন বিজিএমইএ ও এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি, সংসদ সদস্য শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন। গতকাল রোববার ঢাকার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে বাংলাদেশ বিজনেস সামিটের দ্বিতীয় দিনের ‘টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেল’ অধিবেশনের সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন।

অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী। এ সময় তিনি বলেন, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হতে চাইছে না বলেই গ্যাস-বিদ্যুতের দাম সমন্বয় করা হয়েছে। ভর্তুকি কমাতে হয়েছে। দাম বাড়ানো হলেও সরবরাহ ঠিক রাখা হচ্ছে। কারখানাগুলোতে আগের তুলনায় অনেক বেশি চাপে গ্যাস সরবরাহ হচ্ছে। ফলে গ্যাসের সংকট কেটে যাচ্ছে।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, দেশে এখন বিনিয়োগের সর্বাত্মক পরিবেশ রয়েছে। সরকার যোগাযোগ খাতে ব্যাপক উন্নয়ন করেছে। প্রতিটি জেলার সঙ্গে সহজ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। রেল, নদী ও স্থল যোগাযোগে উন্নতি হয়েছে। পদ্মা সেতুর ফলে যোগাযোগে অভূতপূর্ব উন্নতি হয়েছে। পাশাপাশি সরকার বিনিয়োগ সহজ করেছে। এ লক্ষ্যে সব ধরনের সহযোগিতা করছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্যবসাবান্ধব। তিনি পোশাক খাতকে ব্যাপক সহযোগিতা দিয়েছেন। করোনাকালে প্রধানমন্ত্রী এ খাত সচল রাখতে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা দিয়েছিলেন। ফলে আমাদের রপ্তানি আয় না কমে বেড়েছে। ভবিষ্যতে আমরা এ খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন ও ট্রিলিয়ন ডলারের আয়ের জন্য যাত্রা শুরু করেছি।

‘পোশাক খাতের ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রপ্তানির লক্ষ্যে: স্থায়িত্ব, প্রতিযোগিতা এবং বিনিয়োগের সুযোগ সুবিধা’ শীর্ষক অধিবেশনটির মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন, বিজিএমইএর সভাপতি ফারুক হাসান, পরিচালক আজিজুর আর চৌধুরী। আলোচক ছিলেন- উরমি গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আসিফ আশরাফ, বিকেএমইএর নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বিটিএমএর সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন, ওয়ালমার্টের জ্যেষ্ঠ পরিচালক শ্রীদেবী কালাভাকোনালু।

শফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বাংলাদেশ কর্মসংস্থানের জন্য নিরাপদ স্থান। এখানে শ্রমিকরা তাদের অধিকারের বিষয়ে সচেতন। তারা মালিক পক্ষের সঙ্গে দর কষাকষি করতে পারেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শ্রমিক অধিকার নিশ্চিতে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। কয়েক দফায় তাদের মজুরি বাড়িয়েছেন। একই সময়ে খাত সংশ্লিষ্টদের সুযোগ সুবিধার বিষয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন। করোনা মহামারির সময় শ্রমিকদের বেতন-ভাতার জন্য বিশেষ বরাদ্দ দিয়েছেন। এবং বর্তমানে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে নিত্যপণ্য ও জীবনযাত্রা ব্যয় বেড়েছে, তখন নতুন মজুরি বোর্ড গঠনের উদ্যোগ নিয়েছেন।

তিনি বলেন, অনেকে আমাদের খাত নিয়ে সমালোচনা করেন। সমালোচনার দরকার আছে। কিন্তু তা হওয়া উচিৎ বস্তুনিষ্ঠভাবে। আমরা প্রকৃতিক ও ব্যক্তি সৃষ্ট দুর্যোগ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় পোশাক কারখানাগুলো এখন বাংলাদেশের। একইভাবে কারখানা ব্যবস্থাপনায় আমরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। কর্মপরিবেশেও আমরা শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছি।

মুক্ত আলোচনায় তৈরি পোশাক কারখানার অব্যবহৃত টুকরা কাপড় বা ঝুট ব্যবস্থাপনার বিষয়ে অতিথি ও আলোচকরা বলেন, পোশাক কারখানার কাপড়ের টুকরা ফেলনা নয়। পুনঃপ্রক্রিয়াজাত করে সুতা তৈরি হচ্ছে। পলিয়েস্টার, ভিসকসসহ বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম তন্তু দিয়ে সুতা তৈরি করছে। বর্তমান বিশ্বে এসব পণ্যের অনেক চাহিদা রয়েছে।

এ সম্পর্কিত খবর

No stories found.
logo
kalbela.com