
বাংলাদেশেই একমাত্র দেশ যেখানে শ্রমের মজুরি সবচেয়ে কম। শুধু তাই নয়, এখানে বিদ্যুৎ, পানিসহ অন্যান্য পরিষেবা ব্যবহারের খরচও অনেক কম। আছে ১৭ কোটি মানুষের বড় একটা বাজার। সহজ মুনাফা অর্জন ও তা স্থানান্তরের সুবিধাসহ ব্যবসা পরিচালনায় সার্বিক নিরাপত্তার আছে নিশ্চয়তা।
বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে ‘এফবিসিসিআই বিজনেস সামিট ২০২৩’ এ আমন্ত্রিত বিভিন্ন দেশের উদ্যোক্তা-বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদের এমন বার্তাই দিল বাংলাদেশ।
গতকাল রোববার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সামিটের দ্বিতীয় দিনে ‘বাংলাদেশে ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, বাংলাদেশ উৎপাদন ব্যবস্থায় দক্ষতার সঙ্গে উন্নতি করার চেষ্টা করা হচ্ছে। ৬০ বিলিয়ন থেকে ২০৩১ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে সরকার। নানামুখী উদ্যোগের ফলে বর্তমানে ভালো বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে। পাওয়ার সেক্টরের জন্য এরই মধ্যে কাতার ও সৌদি আরবের সঙ্গে কাজ করা হচ্ছে। গ্যাসের সমস্যা সমাধানে অভ্যন্তরীণ উৎসকেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধে উপস্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তিনি তার প্রবন্ধে দেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, অর্থনৈতিক অঞ্চল, বিনিয়োগকারীদের সুযোগ-সুবিধার বিষয় তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চেয়ে সাশ্রয়ী ও নিরাপদ বিনিয়োগ পরিবেশ রয়েছে বাংলাদেশে। সালমান এফ রহমান বলেন, বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করে দেখেছে এখানে তা লাভজনক। কারণ এ অঞ্চল থেকে ভারত ও চীনের বাজারে প্রবেশ অনেক সহজ। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগ করলে শ্রম খাতে সাশ্রয় হবে ৪৭ থেকে ৮৪ শতাংশ। মজুরি সাশ্রয় হবে ৪১ থেকে ৬৯ শতাংশ পর্যন্ত। এ ছাড়া ৬ থেকে ৮৯ শতাংশ সাশ্রয় হবে পানিতে, বিদ্যুতে সাশ্রয় হবে ১০ থেকে ৫৫ শতাংশ পর্যন্ত। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, সরকার বিনিয়োগবান্ধব করে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। এরই মধ্যে অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ করেছে চীন, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান। ই-কমার্স খাতে শৃঙ্খলা এসেছে। ১০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে কাজ করছে দেশ।
এফবিসিসিআইর সাবেক সভাপতি হা-মীম গ্রুপের চেয়ারম্যান এ. কে. আজাদ বলেন, বিশ্বে এখন ম্যানমেড ফাইবারের চাহিদা বাড়ছে। এ খাতে ১০০ বিলিয়ন ডলারের বিনিয়োগ আনা সম্ভব। পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, নিরাপদ কর্মপরিবেশের পাশাপাশি রয়েছে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। তাই নিশ্চিন্তে বিনিয়োগ করতে পারেন বিনিয়োগকারীরা।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতি ডিজিটাল করার কাজ শুরু হয়েছে। কৃষি এবং খাদ্য খাতে আগ্রহী হচ্ছেন বিনিয়োগকারীরা। লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং সেক্টরেও বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে।